দিঘার কাছেই মাত্র ৬ ঘণ্টা জেগে থাকে এই রহস্যময় দ্বীপ


দু' এক দিনের ফুসরত মিললেই সকলে কম বেশি হাজির হই সমুদ্র সৈকতে৷ আর কাছেই যখন সেই উপভোগ পাওয়া যায় তাহলে দূরে যাওয়াই বা কেন? ঠিকই ধরেছেন! দিঘার কথাই বলা হচ্ছে৷ দিঘা তো সকলেই যায়৷ ভিড় বাড়লে তালসারিও যায় অনেকে৷ তবে এবার একটু বেপথু হয়ে বিচিত্রপুর চলে যান! নামের মধ্যেই তো অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ মিশে রয়েছে৷

বিচিত্রপুর, দিঘার খুব কাছাকাছি এই এলাকা৷ আবার তালসারির গা ঘেঁষা শহরও বলা যায়৷ যারা উইকেন্ড ফ্রিক আউট ম্যানিয়াক ধরনের মানুষ তাদের জন্য বিচিত্রপুর এক আদর্শ জায়গা৷ তবে যাবেন কিভাবে? তা তো জানা নেই৷

প্রথমে উদয়পুর পেরিয়ে বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে চন্দনেশ্বর মন্দিরের পাশ দিয়ে সোজা নেমে যান তালসারিতে৷ তবে সেখানে গেলেই মিলবে না বিচিত্রপুরের ছোঁয়া৷ পাবেন না ছায়া ঘেরা ছোট্ট পান্থশালা৷ চারিদিকে চোখ বোলালে দেখতে পাবেন বেশ কয়েকটি স্টার রিসর্ট৷ তবে সেখানে থাকতে চাইলে অবশ্যই আগে বুকিং করে যাবেন৷ তা নাহলে আপনাকে হয়তো রাস্তাতেই দিন কাটাতে হতে পারে৷ আর যদিও বা শিঁকে ছিড়ে আপনি ঘর পেয়ে যান সেই ঘর ভাড়া ৩০০০ টাকা থেকে শুরু৷ তবে এখানের একটি বিশেষত্ব রয়েছে৷ প্রতিটি রিসর্টে আপনি নারকেল গাছ পাবেন৷ এমনকি বেশ কয়েকটা ঘরের পাশেই রয়েছে৷ হাত বাড়ালেই নাগালে আসতে পারে নারকেল৷

তবে এ তো গেল তালসারির কথা৷ এর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বিচিত্রপুর৷ তালসারি থেকে সেখানে যেতে গেলে আপনাকে চন্দনেশ্বর মন্দিরের গা দিয়ে রাস্তা বরাবর এগিয়ে যেতে হবে৷ একেবারে গ্রামের পথ৷ রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে পাবেন তরমুজ খেতও৷ এরপর কিছুটা আঁকাবাঁকা পথ৷ আর তারপরই রোদ আর ছায়ার মিলমিশে একটা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আসবে৷ এখান থেকেই শুরু বিচিত্রপুরের রহস্য৷ এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে পাবেন ওড়িশা ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের একটি টিকিট কাউন্টার৷ ৮ সিটের ফাইবার স্পিড বোট ছাড়ে সেখান থেকে৷ ১২০০ টাকা প্রতি ট্রিপ৷ টিকিট কেটে উঠে পড়ুন সেই বোটে৷

এই স্পিড বোট আপনাকে নিয়ে যাবে মোহনার কাছাকাছি৷ যেখানে সুবর্ণরেখা সাগরে পড়েছে৷ এখানেই স্পিট বোড আপনাকে নামিয়ে দেবে একটি দ্বীপে৷ এই দ্বীপের নামই বিচিত্রপুর৷ অদ্ভূত জ্যামিতির নকশায় দাঁড়িয়ে রয়েছে দ্বীপটি৷ নামার সঙ্গে সঙ্গেই কানে আসবে পাখিদের কলকাকলি৷ তবে এখানে আপনি জোয়ারের সময় আসতে পারবেন না৷ এই দ্বীপের আসল রহস্য দিনে মাত্র ৬ ঘন্টা জেগে থাকে এই দ্বীপটি৷ তাই এর আকর্ষণ এত৷

দ্বীপটিতে পা দেওয়ার পর থেকে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্যাকেট বোতল কিছুই আপনার নজরে আসবে না৷ তবে এই দ্বীপে মদ্যপান একেবারে নৈব নৈব চ! হাতে যতটা সময় পাবেন দ্বীপটি ঘুরে নিন৷ কারণ দ্বীপটির একেক জায়গায় একেক সৌন্দর্য৷ এখানে এসে সময় নষ্ট মানে বোকামির পরিচয়৷ তবে চিন্তা নেই৷ ফের নির্দিষ্ট সময়ে বোট আপনাকে নিতে চলে আসবে৷ আবার ফেরার পালা সভ্যতায়৷ সেই স্পিড বোট৷ তবে এত কিছু প্রাপ্তির পাশাপাশি আপনি একই সঙ্গে এশিয়ার সর্ব বৃহৎ সূর্ষমুখী ফুলের চাষের সন্ধানও পাবেন এখানে৷ যা এক কথায় সানফ্লাওয়ার অয়েলের আঁতুর ঘর৷