মহোৎসবে নাশকতা! রাজ্যকে সতর্কবার্তা দিল কেন্দ্র


শারদোৎসবের উচ্ছলতার আড়ালেই জাল বুনছে হিংসা। অন্তত তেমনটাই আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দাকর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্যবাসীর আনন্দবিহ্বলতার মধ্যেই মোক্ষম আঘাত হানতে পারে জঙ্গিরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে সম্প্রতি এই বিষয়ে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বার্তায় জানানো হয়েছে, জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর চার জঙ্গি নেতা এ রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে আছে। তারা হল মহম্মদ সালাউদ্দিন, মহম্মদ জাহিরুল মহম্মদ রাকিব ও মহম্মদ রিয়াজ আলি চৌধুরী। মাস দুয়েক আগে ও-পার থেকে এসে তারা উত্তর দিনাজপুরের দিনহাটা এলাকার এক যৌন পল্লিতে ওঠে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার ছক কষেছে ওই পান্ডারা। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী মূলত উত্তরবঙ্গে নাশকতার ছক কষে নেপাল থেকে বিস্ফোরক এনে মজুত করেছে তারা। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, গোটা রাজ্যেই নাশকতার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই চার নেতা উত্তরবঙ্গের ডেরা থেকেই রাজ্য জুড়ে নাশকতা চালাতে পারে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কবার্তার ভিত্তিতে সোমবার রাজ্য জুড়ে সব পুলিশ সুপার ও কমিশনারেটকে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের গোয়েন্দাকর্তাদের কথায়, শুধু নজরদারি নয়। কিছু জঙ্গি নেতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালানোর জন্যও বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সুপার ও কমিশনারেটের কর্তাদের। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বার্তায় জেএমবি-র চার মাথার কার্যকলাপের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। তারা এ দেশে আনাগোনা করছে বলে মাস ছয়েক আগেই খবর এসেছিল। কিন্তু এ রাজ্যে তাদের ঘাঁটি গেড়ে থাকার বিষয়টি এত দিন জানা ছিল না। ওই বিষয়ে বিশদ ভাবে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরকে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বার্তা অনুযায়ী রাজ্য জুড়ে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে রাজ্য সব গোয়েন্দা সংস্থাকে। কড়া নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়।

এই সূত্রে উঠে আসছে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের প্রসঙ্গও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় সংগঠন জোরদার করেছে জেএমবি। কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছে তারা। এ-পার বাংলায় নিজেদের জোরদার উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য তারা রাজ্যের যে-কোনও এলাকায় আচমকা হিংসাত্মক ঘটনা ঘটাতে পারে। ওই কর্তার দাবি, বছর চারেক আগে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাতেই পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র তৎপরতা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তার পরে বছর দুয়েক ওই সংগঠনের নেতারা গা-ঢাকা দিয়ে ছিল। তারা যে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে, সেটা জানান দেওয়ার জন্য উৎসবকেই বেছে নিয়েছে।