নবান্ন থেকে সারদার ফাইল তলব করল সিবিআই

প্রধানমন্ত্রীর দফতর বলার পরে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা জানতে চেয়ে নবান্ন থেকে সারদা-ফাইল তলব করল সিবিআই। গত ৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কলকাতাস্থিত যুগ্ম-অধিকর্তা পঙ্কজকুমার শ্রীবাস্তব রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে এই মর্মে একটি চিঠি লিখেছেন। তাতেই বিশেষ দূত মারফত ওই নির্দিষ্ট ফাইলটি সিবিআইয়ের হাতে দ্রুত তুলে দিতে বলা হয়েছে। যদিও নবান্ন মনে করছে,  সিবিআইয়ের ফাইল চাওয়ার ঘটনা অনৈতিক। ফলে আপাতত ওই ফাইল সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

নবান্নের খবর, সিবিআইয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর ২০১১-র ১২জুলাই রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব জ্ঞানদত্ত গৌতমের কাছে সারদার কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে রিপোর্ট চেয়েছিলেন। কারণ, কংগ্রেসের সাংসদ এ এইচ খান চৌধুরী ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লক্ষ লক্ষ আমানতকারীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছিলেন। সেই চিঠি পেয়ে রাজ্য সরকার কী করেছিল, তা জানতে চেয়ে সিবিআই স্বরাষ্ট্র দফতরে শেষ চিঠিটি দিয়েছিল ২০১৪-র ১৯ সেপ্টেম্বর। কারণ, রাজ্য এ নিয়ে জবাব দিতে টালবাহানা করছিল। সিবিআইয়ের যুগ্ম-অধিকর্তা নবান্নে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, '২০১৫-র ৮ জুলাই স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত সচিব দীনবন্ধু ভট্টচার্য জবাবে বলেছিলেন রাজ্য সারদার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিতে অপারগ। এখন আমরা দেখতে চাই, ঠিক কোন প্রেক্ষিতে রাজ্যের এমন সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পাঠানো নির্দেশের পরেও ওই সংক্রান্ত ফাইলে সিদ্ধান্ত কী ভাবে নেওয়া হয়েছিল।'

সিবিআই সূত্রের দাবি, ''রাজ্য সরকারের পাঠানো জবাবে বলা হয়েছিল, সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের প্রমাণ মেলেনি। অথচ রাজ্যেরই গঠিত সিট শুধু সারদা নিয়েই ৫৩১টি ফৌজদারি মামলা করেছে। ফলে জানা দরকার, কিসের ভিত্তিতে বা কার নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দফতর বলার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।''

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ''রাজ্য এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত সেরে সিবিআইকে জবাব দিয়েছিল। এই অধ্যায় সেখানেই শেষ হয়েছে। তার মাঝে যে সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ওই অভিযোগ করেছিলেন, তিনি নিজেই তা প্রত্যাহার করে নেন। ফলে নতুন করে সেই ফাইল চেয়ে পাঠানোর প্রয়োজন নেই।''

সিবিআই অবশ্য অন্য কথা বলছে। তাঁদের এক মুখপাত্র জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলা সারদা তদন্ত শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এখন চূড়ান্ত চার্জশিট দেওয়ার পালা। ফলে এখন সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও প্রভাবশালীদের খোঁজ চলছে। সেই কারণে নবান্নের সারদা ফাইল দেখে  বোঝার চেষ্টা হবে, কী কারণে পিএমও বলার পরেও রাজ্য সে সময় সারদা নিয়ে কোনও তদন্ত করেনি। প্রয়োজনে তৎকালীন আমলাদের কাছেও সিবিআই সহযোগিতা চাইবে।