পাক মদতে হাসিনাকে খুনের চেষ্টায় খালেদা পুত্রের যাবজ্জীবন


ঢাকা: চোদ্দ বছর পর সেই ভয়াবহ হামলার রায় বের হল৷ পরপর গ্রেনেড ছুঁড়ে, গুলি চালিয়ে বাংলাদেশের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টা হয়েছিল৷ সেই মামলায় যাবজ্জীবনের সাজা হয়েছে পাকিস্তানের মদতে হামলার নীল ছক করা তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের৷ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়৷ জখম হন অন্তত ৩০০ জন৷

খালেদা পুত্র তারেক আছে লন্ডনে৷ বুধবার ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে পুরো মামলার প্রক্রিয়াকে প্রহসন বলেছেন তিনি৷

রায় দান ঘিরে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা শহরের সর্বত্র জারি হয়েছে নিরাপত্তার বলয়৷ দেশের অন্যত্র জারি হয়েছে সতর্কতা৷

রাযে ১৯জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯জনের যাবজ্জীবন ও বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

আলফাকে মদতকারী বাবরের ফাঁসি:

রায়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুফুৎজ্জামান বাবরের মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে৷ তবে বাবর জেলে বন্দি৷ তার বিরুদ্ধে ভারত বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে৷ ২০০৪ সালেই বিএনপির আমলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় অসমের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আলফা (স্বাধীনতা) প্রধান পরেশ বড়ুয়ার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ১০ ট্রাক আগ্নেয়াসাস্ত্র পাচার হচ্ছিল৷ সেই অস্ত্র চালান ধরা পড়ে৷ আর সেই মামলায় অন্যতম আসামী বাবরকে আগেই ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে৷

নাশকতা পাকিস্তান যোগ: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ২৫১ জন সাক্ষী, ২০ জন সাফাই সাক্ষী, ১০ সাক্ষী ও গ্রেফতার ১২ আসামির জবানবন্দি পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন, তেহরিক ই জিহাদি ইসলামি, লস্কর ই তইবা, জইশ ই মহম্মদ, হরকাতুল মুজাহিদিন, হরকাতুল জিহাদ ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও ) জঙ্গি সংগঠনের নাম৷ এরা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই )নিয়ন্ত্রিত৷

এক নজরে সেই ঘটনা:

১.২০০৪ সালে বাংলাদেশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি৷ একইসঙ্গে শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জে পুলিশি নির্যাতন হয়৷ তার প্রতিবাদে সেই বছর ২১শে আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ জনসভার ডাক দেয় ৷ সেখানেই তৎকালীন বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷

২.স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার কিছু পরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে তৈরি মঞ্চে ভাষণ দিয়ে নেমে আসছিলেন হাসিনা৷ তখনই শুরু হয় হামলা৷

৩.মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে ১১টি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷ শুরু হয় এলোপাথাড়ি গুলি চালনা৷ এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন এবং পরে হাসপাতালে আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়৷ দলীয় নেতাকর্মীদের তৈরি মানব ঢালের আড়ালে কোনওরকমে বেঁচে গিয়েছিলেন হাসিনা৷ কিন্তু বিস্ফোরণে মারাত্মক জখম হয়ে মৃত্যু হয় আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় মহিলা নেত্রী আইভি রহমানের৷ তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ছিলেন।

৪.সেদিন অন্তত ৩০০ জন জখম হয়েছিলেন৷ অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা অন্যতম নেত্রী দীপু মনি৷