পাক সেনা দফতরে হানা ভারতের


জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ এবং ঝালাস অঞ্চলে ভারতীয় সেনার ব্রিগেড দফতর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা। তার জবাবে পাক- অধিকৃত কাশ্মীরের খুইরাট্টা এবং সামানি এলাকায় পাক সেনার সদরে হামলা চালানো হয়েছে বলে আজ দাবি করল ভারতীয় সেনা।

সেনা জানিয়েছে, ২৩ অক্টোবর পুঞ্চে ব্রিগেড সদর দফতর-সহ সেনার ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাক সেনা। জবাবে আজ পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের খুইরাট্টা ও সামানিতে পাক সেনার প্রশাসনিক সদর দফতরে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা।

সেনার তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীরা পাক সেনার দফতর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেছেন। তাছাড়া পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাওয়া তথ্যেও জানা গিয়েছে, ভারতীয় হামলায় বেশ ভালই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাক সেনার দফতর। সেনার দাবি, সংযম বজায় রেখেছে ভারত। তাই নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের হাজিরা, বান্ডি গোপালপুর, নিকিয়াল, সামানি ও খুইরাট্টার জনবসতি অঞ্চল লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়নি। হামলার একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে সেনা। সেনার দাবি, ২০১৭ সালে ভারতের পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের ১৩৮ জন সেনা নিহত হন। তবে ২০১৮ সালে পাকিস্তান ফের সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানায়। ফলে তাদের হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কমে। সেনা জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর সুন্দরবনি সেক্টরে পাক সেনার ব্যাট বাহিনীর দুই সদস্য নিহত হয়। তাদের দেহ নেয়নি পাকিস্তান। এক সেনা কর্তার কথায়, ''পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দারিদ্র ও অবহেলা বজায় থাকাই পাক সেনার স্বার্থের পক্ষে অনুকূল। কারণ, তা হলে ওই এলাকার যুবকদের তারা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবে। নিজেরা বসে থাকবে সুরক্ষিত ঘাঁটিতে। যে সেনার বিন্দুমাত্র সম্মানবোধ আছে তাদের পক্ষে এমন কৌশল নেওয়া অসম্ভব। সেনাদের দেহ ফেরত নিতে না চাওয়াও এই মানসিকতারই প্রতিফলন।''

২০১৬ সালে উরির সেনাঘাঁটিতে হামলার পরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তাতে পাকিস্তানকে রীতিমতো 'শিক্ষা' দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তার পরেও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা বা পাক হানাদারি, কোনওটাই কমেনি। এ দিনও শ্রীনগরের পান্থা চকে বিএসএফের গাড়ির উপরে জঙ্গি হানায় আহত হয়েছেন পাঁচ জওয়ান।
১ মে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বিএসএফের দুই জওয়ানকে খুন করে মুণ্ড কেটে নেয় পাক সেনা। ফলে ফের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য সরকারের উপরে চাপ বাড়ে। একের পর এক হামলার ফলে ক্রমশ প্রশ্নের মুখে মোদী সরকারের পাকিস্তান ও কাশ্মীর নীতি। সার্জিকাল স্ট্রাইকের ভিডিয়ো প্রকাশ করে পাকিস্তানকে কতটা 'শিক্ষা' দেওয়া গিয়েছে তা বোঝানোর চেষ্টা করেছিল সরকার। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রেও হামলার ফুটেজ প্রকাশ করে বিরূপ সমালোচনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।