স্বল্পমূল্যের গৃহঋণে সুদের হার কমাতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, স্বাস্থ্যসাথীতে মিলবে ৫ লক্ষ টাকা


মমতা বলেছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উন্নয়নই তৃণমূলের তুরুপের তাস
পুজোর আগেই সুখবর। স্বল্পমূল্যের গৃহঋণে সুদের হার কমাতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের কো-অপারেটিভ হাউজিং ফেডারেশন লিমিটেডের পক্ষ থেকে দেওয়া গৃহঋণেই এবার থেকে কমবে সুদের হার। এর পাশাপাশি, সরকারি স্বাস্থ্যবীমা 'স্বাস্থ্য সাথী'তেও টাকার অঙ্ক বাড়ানো হচ্ছে। এতদিন  দেওয়া হত। নবান্ন সূত্রে খবর, এবার থেকে ওই টাকার অঙ্ক ৫ লক্ষ করা হয়েছে। এ বিষয়ে শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলেও খবর।

পশ্চিমবঙ্গ সমবায় দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, স্বল্পমূল্যের গৃহঋণের ক্ষেত্রে ০.৭৫ শতাংশ সুদের হার এবং ১ বেসিস পয়েন্ট কমানো হবে। ব্যক্তিগত ও কো-অপারেটিভ সোসাইটি, উভয় ক্ষেত্রেই এই সুবিধা কার্যকর হবে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ কো-অপারেটিভ হাউজিং ফেডারেশন লিমিটেড স্বল্প মূল্যের বাড়ির ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বাধিক ২০ লক্ষ টাকা ঋণ দেয়। চলতি নিয়মে সোসাইটি ও ব্যক্তিগত বাড়ির ক্ষেত্রে সুদের হার যথাক্রমে ১০% এবাং ১০.৫%। এই হারই এবার ০.৭৫ শতাংশ কমতে চলেছে।

সমবায়মন্ত্রী আরূপ রায় জানিয়েছেন, রাজ্যের সব মানুষের মাথার উপর ছাদ থাকবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নকে সফল করতেই সমবায় দফতরের এমন উদ্যোগ। ইতিমধ্যে কো-অপারেটিভ হাউজিং ফেডারেশন লিমিটেডকে ঋণ দেওয়ার জন্য সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় মন্ত্রী। প্রসঙ্গত, স্বল্পমূল্যের গৃহঋণের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির তুলনায় এতদিন সামান্য বেশি সুদ নিত কো-অপারেটিভ হাউজিং ফেডারেশন লিমিটেড। কিন্তু, সেক্ষেত্রে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধাও রয়েছে এই সরকারি ঋণে। প্রথমত, স্ট্যাম্প ডিউটি-তে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়। এছাড়া, ঋণ শোধের আগেই গ্রহীতার মৃত্যু হলে, বাকি থাকা 'প্রিন্সিপ্যাল' নিজে থেকেই 'রিপে' হয়ে যেত। সুদের হার কমার পরও এই দুই সুবিধা আগের মতোই বহাল থাকবে বলেও জানা গিয়েছে।

গৃহঋণের পাশাপাশি 'স্বাস্থ্যসাথী' প্রকল্পেও চিকিত্সা বাবদ খরচের টাকা দেড় লক্ষ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ করা হয়েছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের চিকিত্সা বিমার আওতায় নিয়ে আসতেই রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই বিমার টাকার অঙ্ক এবার পরিবার পিছু বছরে পাঁচ লক্ষ হয়ে যাওয়াতে, তা সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমার সমতুল হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসাথীর বাত্সরিক প্রিমিয়ামের টাকা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই মিটিয়ে দেওয়া হয়।

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। এই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এমন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে তাত্পর্যবাহী বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ইতিমধ্যেই একাধিক মঞ্চে মমতা বলেছেন, তাঁর সরকারের করা উন্নয়নই তৃণমূলের পুঁজি।