অন্তঃসত্ত্বার জটিল অস্ত্রোপচার বনগাঁর সরকারি হাসপাতালে


বনগাঁ, ৮ অক্টোবর - দু'‌মাসের গর্ভবতী এক মহিলার ডিম্বাশয়ের জটিল অস্ত্রোপচার করলেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। বনগা মহকুমা হাসপাতালে এই সফল অস্ত্রোপচার করলেন এই হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ‌মহিতোষ মণ্ডল। এই ঘটনায় গর্বিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মহিতোষবাবু বলেন, '‌ওই মহিলা যাতে সুরক্ষিতভাবে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারেন, সেটিই আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। তার একটি বড় ধাপ আমরা পার করলাম।'‌ জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর পেটে ব্যথার সমস্যা নিয়ে বনগঁা জীবনরতন ধর মহকুমা হাসপাতালের মহিলা সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হন গাইঘাটা থানার কুলঝুটি গ্রামের গৃহবধূ রুপালি ঢালি। তঁাকে স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল দেখেন। জানা যায়, তিনি ২ মাসের অন্তঃ‌সত্ত্বা। পাশাপাশি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে জানা যায়, ওই বধূর জরায়ুর ভেতরে এবং বাইরে মোট ২টি ভ্রুণ বড় হচ্ছে। একই সঙ্গে তঁার বঁা–দিকের ডিম্বাশয়ে একটি টিউমার হয়েছে। সেটি আকারে বড় হয়ে যাওয়ায় ডিম্বাশয়টি অবস্থান ঘুরে গেছে। রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে এবং ডিম্বাশয়টি পচে গেছে।

রিপোর্ট দেখে প্রথমে বেশ অবাক হয়ে যান চিকিৎসক। সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওইদিনই ফের বাইরে থেকে সোনোগ্রাফি করান। তাতেও একই রিপোর্ট আসে। এই পরিস্থিতিতে জরায়ুর বাইরের ভ্রুণটি যে কোনও মুহূর্তে ফেটে রক্তাক্ত হয়ে রোগী বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যেতে পারেন মহিলা। তাই আর দেরি না করে হাসপাতালের আর এক চিকিৎসক গোপাল পোদ্দারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওদিন রাতেই ওই বধূর অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক মহিতোষ। এক ঘণ্টার ওই অস্ত্রোপচারে তিনি জরায়ুর ভেতরে বাড়তে থাকা জীবন্ত ভ্রুণটিকে সুরক্ষিত রেখে টিউমার–সহ বঁা–দিকের বিপজ্জনক ডিম্বাশয়টিকে কেটে বের করে দেন। ফের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হয়েছেন, বধূর জরায়ুর মধ্যে থাকা ভ্রুণটি সুরক্ষিত আছে। এই গোটা চিকিৎসাটিই সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে হয়েছে। সোমবার সকালে রূপালি ঢালিকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তিনি জানান, '‌মহিতোষবাবু আমাকে নতুন জীবন দান করেছেন। বাকি দিনগুলি তাঁর পরামর্শে চলে আমি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে চাই।'‌‌