৮ মাসের শিশুকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা মায়ের

কাঁথি: মায়ের হাতেই খুন হল ৮ মাসের শিশুকন্যা। আত্মহত্যার চেষ্টা করল মা–ও। এই ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত ভগবানপুরের আবাসবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। শনিবার রাতের ঘটনায় ভগবানপুর থানার পুলিস উদ্ধার করেছে শিশু মৌসুমি বেরার মৃতদেহ। তমলুকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কেরোসিন খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা মা নীলিমা বেরা।

কঁাথির অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানিয়েছেন, ওই শিশুমৃত্যুর ঘটনায় পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের। তবে ঠিক কী কারণে এই খুন, তার কারণ এখনও অজানা তঁাদের। নানা মানুষের মুখে ঘুরছে নানা ব্যাখ্যা। নীলিমার শাশুড়ি রাধারানির জানান, নীলিমা বেশ বেপরোয়া স্বভাবের। ১৮ মাস আগে তঁার ছেলে গৌতমের সঙ্গে বছর পঁচিশের নীলিমার বিয়ে হয়েছিল। মাতৃত্বে সম্মতি ছিল না তার। প্রায় জোর করেই সন্তান ধারণে বাধ্য করিয়ে ছিলেন তাঁরা। ৮ মাস আগে মৌসুমির জন্ম। সেই থেকেই নাকি ওই দুধের শিশুর প্রতি অবহেলা বাড়তে থাকে নীলিমার। আর এই কারণেই নাকি অশান্তি।

জানা গেছে, ৮ মাসের মৌসুমিকে বাড়িতে রেখে শুক্রবার ননদের বাড়িতে গিয়েছিল নীলিমা। শনিবার বাড়ি ফেরার পর তুমুল অশান্তি হয় স্বামী গৌতমের সঙ্গে। তারপরই এমন ঘটনা। নীলিমার স্বামী গৌতম বলেন, '‌দরজা ভাঙার পরই দেখতে পাই মেয়ে বিছানায় পড়ে আছে। রক্তের দাগ বালিশে। আর সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে রয়েছে নিলীমাও। ঘর জুড়ে কেরোসিন ও বিষের গন্ধ।'‌ পুলিস নীলিমাকে উদ্ধার করে প্রথমে চণ্ডীপুরের একটি হাসপাতালে পাঠায়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুকে।
প্রতিবেশীরা আবার কেউ কেউ বলছেন, ‌অশান্তির কারণ শিশুর পিতৃপরিচয়কে ঘিরে। তঁাদের অভিযোগ, মেয়ে মৌসুমি কার ঔরষজাত তা নিয়ে সন্দেহ ছিল গৌতমের। যে কারণে অশান্তি লেগেই থাকত সংসারে। আর সেই কারণে নিজের শিশুকন্যাকে খুন করে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে নীলিমা। ঘটনার বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি নীলিমার বাবার বাড়ির লোকেরা। ঘটনার প্রকৃত কারণ হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুলিস।