চিনি বা নুন নয়, না জেনেই রোজ খেয়ে চলেছি এই বিপজ্জনক সাদা বিষ


সোডিয়াম গ্লুটামেট বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট হল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত খাদ্য সংযোজনগুলির মধ্যে অন্যতম। রেস্টুরেন্টগুলিতে পরিবেশিত খাবারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এটি। সোডিয়াম গ্লুটামেট স্বাভাবিকভাবেই কিছু খাবারে উপস্থিত থাকে এবং সাধারণত নুন বা চিনির মতোই একটি সাদা স্ফটিক পাউডারের আকারেই উপস্থিত থাকে। যেহেতু মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট খাবেরর সুগন্ধ বাড়ায় তাই এটি খাবারের মাংস মাংস স্বাদও বাড়িয়ে তোলে। এটি স্নায়ু কোষের উপর উত্তেজনাপূর্ণ প্রভাব ফেলে যে কারণে আমাদের খিদে বেড়ে যায়। "খুব অল্প পরিমাণে হলে এমএসজি নিরাপদ হতে পারে তবে এটি অ্যালার্জি ঘটাতে পারে বলে অল্প পরিমাণেও ক্ষতিকারক হতে পারে। বড় মাত্রায় ব্যবহার তো অবশ্যই ক্ষতিকারক। উল্লেখযোগ্য যে, প্রসেসড চিপস, প্যাকেজড স্যুপ, টিনজাত খাবারে এই নুন থাকে। কোনও প্যাকেজড অবস্থায় খাবার কেনার আগে খাদ্যের লেবেল পরীক্ষা করতে হবে এবং এমএসজি তালিকাভুক্ত হলে এড়াতে হবে।" বলেন পুষ্টিবিদ পূজা মালহোত্রা।

তাঁর মতে, "রাসায়নিকভাবে, প্রাকৃতিক খাবার এবং প্রসেসড খাবারের মধ্যে পাওয়া কোন পার্থক্য নেই। তবুও প্রসেসড খাবারের অন্যান্য উপাদানগুলির কারণে বা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করার কারনে এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।" সোডিয়াম গ্লুটামেট রয়েছে এমন খাদ্যদ্রব্যগুলির মধ্যে রয়েছে টিনজাত খাবার, সসেজ, চিপস, প্রসেসড স্যুপ, হট ডগ, বিয়ার এবং আরও অনেক কিছু। পনীর, টমেটো, মটরশুটি, আখরোট, গম ইত্যাদি খাদ্যেও স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত থাকে। সোডিয়াম গ্লুটামেটের অতিরিক্ত পরিমাণ বেশি খাবার লোভ, অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, স্থূলতা এবং অন্যান্য বিপাকীয় রোগের সাথে সম্পর্কিত।


1. গবেষণায় বলা হয়েছে যে বিশ্বব্যাপী 2,00,000 টনের মতো সোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহার করা হয়। এই লবণের অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মাইগ্রেন, মাথা ঘোরা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা, বুকের ব্যথা এবং আরও অনেক কিছু হতে পারে।

2. আমাদের জিভের গ্রহীতাগুলিকে প্রভাবিত করে সোডিয়াম গ্লুটামেট খাবারকে আরও স্বাদযুক্ত করে তোলে এবং একারণেই ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সমস্যা দেখা যায়।

3. এটা আমাদের খাবারের প্রতি লোভ এমন বাড়িয়ে দেয় যে যখনই আমাদের খিদে পায় তখনই হাতের সামনে যা পাই মনে হয় খেয়ে নিই। সোডিয়াম গ্লুটামেট মস্তিষ্কের কোষগুলির উপর একই রকম প্রভাব ফেলে।

4. পরোক্ষ দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের মধ্যে রয়েছে, স্থূলতা এবং অন্যান্য বিপাকীয় রোগ। কিছু গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, খাবারে সোডিয়াম গ্লুটামেটের কারণে ডায়াবেটিসের সংখ্যা বেড়েছে।

5. সোডিয়াম গ্লুটামেটের অত্যধিক ব্যবহারে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির অকার্যকারীতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন এবং স্ট্রোক ও অন্যান্য ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।

6. অন্যান্য ক্ষতিকারক প্রভাবের মধ্যে রয়েছে তীব্র মাথা ব্যাথা, পেশীর শক্ত হয়ে যাওয়া, অসাড়তা, শিরশিরানি, দুর্বলতা।