সর্বভারতীয় বেতনক্রম চালু না হলে আমরণ অনশনের হুমকি প্রাথমিক শিক্ষকদের


কলকাতা : অবিলম্বে এরাজ্যে চালু করতে হবে সর্বভারতীয় স্তরে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য প্রচলিত বেতনক্রম ( PRT স্কেল)। এই দাবিতে গতকাল থেকে শহীদ মিনারের সামনে দু'দিন ব্যাপী অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন রাজ্যের প্রায় হাজারদুয়েক প্রাথমিক শিক্ষক। তাঁরা আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রশাসনকে আলোচনায় বসার সময় দিয়েছেন। দাবি পূরণ না হলে আমরণ অনশনে বসার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুর থেকেই উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (UUPTWA) ডাকে এই বিক্ষোভে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। তাঁদের অভিযোগ, সর্বভারতীয় স্তরে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন ৯৩০০-৩৪৮০০ টাকা ও গ্রেড পে ৪২০০ টাকা। সেখানে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন মাত্র ৫৪০০-২৫২০০ টাকা ও গ্রেড পে ২৬০০ টাকা।

UUPTWA-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চন্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের মূলত একটাই দাবি। কেন্দ্রীয় ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন দিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষকদের যে সর্বভারতীয় যোগ্যতামান তা বাংলার প্রাথমিক শিক্ষকরাও অর্জন করেছেন। তা সত্ত্বেও সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যে বেতনক্রম রয়েছে, তার থেকে অর্ধেক বেতন পান এরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। এই বঞ্চনা ও বৈষম্যের প্রতিবাদে হাজার হাজার শিক্ষক জমায়েত হয়েছেন।" 

তাঁর হুঁশিয়ারি, "যদি সরকার পক্ষ থেকে বলা হয় পে কমিশনের আগেই আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে, তাহলে ভালো। না হলে আমরা আমরণ অনশনের দিকে যাব। এই মঞ্চ ছেড়েও উঠব না। "

গতকাল হাজির ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ও। প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, "এটা খুব দুঃখের। শিক্ষকরা যখন পথে নেমে আসেন তখন বোঝা যায় সমাজ ভালোভাবে চলছে না। এটা একটা সামাজিক ব‍্যাধির প্রতিফলন। শিক্ষকদের দাবি অত‍্যন্ত সংগত।" তাঁর প্রশ্ন, "অন্য রাজ্যে যখন সর্বভারতীয় বেতনক্রম অনুযায়ী বেতন দেওয়া হচ্ছে, তখন এরাজ্যের শিক্ষকরা তা পাবেন না কেন?"

এছাড়াও শিক্ষক সংগঠনের ডাকে বিক্ষোভ মঞ্চে হাজির হন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি এবং বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকার ক্লাবকে টাকা দিচ্ছে, কার্নিভালে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। কিন্তু, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রাপ্য টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করছে।