মেয়ের বিয়ে দিতে নিজের কিডনি বেচতে চাইছেন অসহায় মা


গোরক্ষপুর: সন্তানের ভালো চেয়ে বাবা-মা কী না করেন৷ সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে সবটুকু দিয়ে দিতে পারেন তাঁরা৷ যেমন উত্তরপ্রদেশের বিচ্ছিয়ার বীনা শ্রীবাস্তব৷ মেয়ের বিয়ে দিয়ে হাসিমুখটা দেখবেন বলে নিজের কিডনি বিক্রি করতেও প্রস্তুত৷ কিডনি কীভাবে বিক্রি হয়, তা বেঁচে কত টাকাই বা আসে কিছুই জানেন না বীনাদেবী৷ শুধু শুনেছে কিডনি বিক্রি করতে পারলে যে টাকা হাতে আসবে তাতে হেসেখেলে মেয়ের বিয়েটা দিয়ে দিতে পারবেন৷

বীনাদেবীর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে আগামী ২৩ নভেম্বর৷ বিয়ের দিন পাকা হওয়ার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন৷ মেয়ের বিয়ের সাহায্য চেয়ে দোরে দোরে ঘুরেছেন৷ কিন্তু কোনও সহৃদয় ব্যক্তিই এগিয়ে আসেননি৷

কিন্তু এবার তো আর হাতে সময় নেই৷ দিশেহারা বীনাদেবী তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজের কিডনি বিক্রি করেই বিয়ে দেবেন মেয়ের৷ ১৯৯৫ সালে বিচ্ছিয়ার সচ্চিদানন্দ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে বিয়ে হয় বিহারের মুজফ্ফরপুরের বীনাদেবীর৷ সচ্চিদানন্দবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী দুই ছেলেকে রেখে মারা যান৷ তারপরই বিয়ে করেন বীনাদেবীকে৷ কিন্তু বিয়ের পর বীনাদেবী মেয়ের জন্ম দিলে সংসারে অশান্তি শুরু হয়৷

সচ্চিদানন্দবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দুই ছেলে সৎ বোনকে সম্পত্তি দিতে নারাজ৷ ২০০২ সালে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে মেয়ে নিয়ে আলাদা হয়ে যান বীনাদেবী৷ আপাতত সচ্চিদানন্দবাবু নাগাল্যান্ডে থাকেন৷ বীনাদেবী ২১ বছরের মেয়েকে নিয়ে রয়ে গিয়েছেন বিচ্ছিয়াতেই৷ ভাড়া বাড়িতে৷ মুজফ্ফরপুরের রবিরঞ্জন শ্রীবাস্তবের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছেন৷ আগামী মাসেই বিয়ে৷

কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়৷ মেয়ের বিয়ে যে দেবেন আর্থিক সঙ্গতি তো নেই৷ ভেবেছিলেন অন্যান্যদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে কাজটা সামলে নেবেন৷ কিন্তু এখন তো তার কোনও আভাসই পাচ্ছেন না৷ এরপরই বৃহস্পতিবার এক সংবাদপত্রের দফতরে হাজির হন তিনি৷

বলেন, পাত্রপক্ষ খুবই ভালো৷ ওরা তো দেওঘরেও বিয়ে করাতেও প্রস্তুত৷ এতে খরচ তেমন নেই৷ কিন্তু মেয়েকে ভালোভাবে বিদায় তো করাতে হবে৷ একমাত্র সন্তান৷ বিয়ের অনুদানের জন্য অনলাইনে ফর্ম ফিলআপও করেছেন৷ কিন্তু সে টাকা আসতে আসতে ২৩ নভেম্বর৷ তাই ভাবছেন নিজের একটা কিডনি যদি বিক্রি করা যায়৷