লোকদেখানোর জন্য আড়াই টাকা দাম কমিয়েছে কেন্দ্র।

পেট্রল-ডিজেলের দাম কমাতে কেন্দ্রের শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই পালটা দাবি জানালেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেট্রোপণ্যে লিটারপ্রতি দেড় টাকা শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। বিক্রয়কারী সংস্থাগুলির তরফেও ১ টাকা করে দাম কমানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই জেটলি বলেন, "আমি প্রত্যের রাজ্যকে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লিখে অনুরোধ করব যাতে তারাও অন্তত আড়াই টাকা করে করছাড় দেয়।" বার্তাটা স্পষ্ট ছিল,আমরা করে দেখিয়েছি এবার তোমরাও করো। এই সাংবাদিক বৈঠকের মধ্যেই নাম না করে মমতাকে আলাদা করে খোঁচা দেন জেটলি। তিনি বলেন, "যে সব নেতারা নিজের রাজ্যে বসে টুইটে বড় বড় কথা বলেন তারা কী করে এবার দেখব।"

জেটলির এই খোঁচার পর মমতা দাম কমানোর পথে হাঁটেন নাকি পালটা আক্রমণের পথে হাঁটেন তা দেখার অপেক্ষায় ছিল রাজনৈতিক মহল। কারণ অনেকে জেটলির এই পদক্ষেপকে ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে দেখছিলেন। তবে, তৃণমূল নেত্রী পালটা আক্রমণের পথেই হাঁটলেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পালটা দিলেন কড়া ভাষায়। বললেন, "লোকদেখানোর জন্য আড়াই টাকা দাম কমিয়েছে কেন্দ্র। আড়াই টাকায় কিচ্ছু হবে না। বলছে, রাজ্যকে কর কমাতে হবে, তাহলে রাজ্যের কাছ থেকে এত টাকা কেটে নিয়ে যায় কেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে উপহাস করছে আড়াই টাকা কমিয়ে। ক্ষমতায় আসার পর ওরা দশ টাকা অতিরিক্ত কর বসিয়েছে, ওদেরকেই ১০ টাকা কমাতে হবে দাম।" উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ১৫ মাসের মধ্যে মোট ১১ বার এক্সাইজ ডিউটি বা শুল্ক বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। এই ১৫ মাসে পেট্রলে শুল্ক বেড়েছিল ১২ টাকা ৪৭ পয়সা, আর ডিজেলে বেড়েছিল ১৩ টাকা ৪৭ পয়সা। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করলেও শুল্ক আর কমায়নি মোদি সরকার। গত দু'বছরে জ্বালানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে মাত্র ১ বার তাও লিটারপ্রতি ২ টাকা করে।

সে তুলনায় আগেভাগে পদক্ষেপ করেছিল বেশ কয়েকটি রাজ্য। কিছুদিন আগেই সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে লিটারপ্রতি ১ টাকা করে দাম কমানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য একাধিক রাজ্যও নিজেদের মতো করে দাম কমিয়েছে। এরপর নতুন করে জেটলির অনুরোধ রেখে দাম কমাতে গেলে চাপে পড়বে রাজ্যের অর্থনীতিও, মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে, সেসবের তোয়াক্কা না করে দুই বিজেপি শাসিত রাজ্য কর কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছে। অনেকে বলছেন, ভোটের আগে চমক দিতেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি পরিকল্পিতভাবে দাম কমিয়েছে। কারণ যাই হোক, দীর্ঘদিন বাদে পেট্রল ডিজেলের দাম কমায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে সাধারণ মানুষ।