শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়াররাই নন, এনবিএ শংসাপত্র না-থাকলে বিপদে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানও!

কুয়েতে চাকরি করতে গিয়ে বিপদে পড়েছিলেন ভারতের বহু ইঞ্জিনিয়ার। কেননা তাঁদের কাছে ন্যাশনাল বোর্ড অব অ্যাক্রেডিটেশন (এনবিএ)-এর শংসাপত্র ছিল না। এ বার শুধু ইঞ্জিনিয়ারেরা নয়, বিপদে পড়তে চলেছে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানও।

অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন বা এআইসিটিই জানিয়ে দিয়েছে, আগামী চার বছরের মধ্যে পৃথক ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতিটি বিষয়ে এনবিএ-র শংসাপত্র সংগ্রহ করতে হবে। নইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চূড়ান্ত শাস্তি হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধও করে দেওয়া হতে পারে বলে রবিবার কলকাতায় বসে কড়া বার্তা দিয়েছেন এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান অনিল সহস্রবুদ্ধে।

কলকাতায় অ্যাসোসিয়েশন অব প্রফেশনাল অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউশনস (আপাই) ও এডুকেশন প্রোমোশন সোসাইটি ফর ইন্ডিয়া (এপসি) আয়োজিত 'ইন হায়ার এডুকেশন: কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স, অ্যাক্রেডিটেশন অ্যান্ড র‌্যাঙ্কিং' শীর্ষক আলোচনাসভার শেষে সহস্রবুদ্ধে জানান, দ্রুত এই বিষয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতিটি বিষয়ের অনুমোদন নিতে হবে এবং সেটা জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটেও। অন্যথায় পড়ুয়াদের আসন কমানো, যে-সব বিষয়ে শংসাপত্র থাকবে না, সেগুলোর পঠনপাঠন বন্ধের পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হতে তো পারেই। বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

কুয়েতে চাকরি করতে গিয়ে বহু ইঞ্জিনিয়ারের বিপদে পড়ার কারণ, এনবিএ-র শংসাপত্র ছিল না তাঁদের। বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করতে হলে বা থাকতে হলে সেই দেশের 'সোসাইটি অব ইঞ্জিনিয়ার্স'-এর কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। কুয়েতের সোসাইটি অব ইঞ্জিনিয়ার্স সেই সঙ্গে জানিয়েছিল, ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে এনবিএ শংসাপত্র পাওয়া কলেজের ডিগ্রি থাকতে হবে। নইলে কুয়েতে বসবাস এবং কাজের ছাড়পত্র দেবে না তারা। তাতেই সঙ্কটে পড়ে যান ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এনবিএ শংসাপত্র পাওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে।

যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন তথা রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ''আমরা এনবিএ-র শংসাপত্র পাওয়ার লক্ষ্যেই এগোচ্ছি। প্রথম শর্ত হিসেবে প্রথম বর্ষ থেকে অভিন্ন পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে। আশা করি, ২০১৯-এর মধ্যে 'সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট' এআইসিটিই-তে পেশ করতে পারব। ২০২০-র মধ্যে এনবিএ শংসাপত্র পেতে পারি।'' মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র বলেন, ''প্রায় ৮০টি এআইসিটিই অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে ৩০% কলেজের বিষয়-ভিত্তিক এনবিএ-শংসাপত্র আছে। বাকিদের ক্ষেত্রেও তা সংগ্রহের কাজ চলছে।''