চন্দননগরে ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সন্ধান, সিআইডি-র জালে চার

নাকের ডগায় বিপদ! হুগলির চন্দননগরে ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সন্ধান পেল সিআইডি। সাধারণ ভাবে,সাইবার অপরাধী, এমনকি জঙ্গিরাও এই ধরনের টেলিফোন এক্সচেঞ্জ তৈরি করে তার মাধ্যমে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম করে থাকে। এ ক্ষেত্রেও তেমন কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন।ইতিমধ্যেই সিআইডি-র জালে ধরা পড়েছে চার অপরাধী। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি নাগরিক মহম্মদ সোনওয়ার জাহান। হুগলির বাসিন্দা পিন্টু দাস, শুভেন্দু ঘোষ, আশিস পাল। কী উদ্দেশ্যে তারা এই ধরনের একটি বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ খুলেছিলতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টেলিকম দফতরের 'টেলিকম এনফোর্সমেন্ট রিসোর্স অ্যান্ড মনিটরিং' (টার্ম) সেল এবং গোয়েন্দাদের অনুমান, এই ধরনের এক্সচেঞ্জ গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাও জড়িত থাকতে পারে। এই দলে আরও কেউ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কী কাজে লাগে?
বিদেশ থেকে ফোন কলগুলিকে এই ধরনের এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আপনার মোবাইলে যখন সেই ফোন ঢুকবে, মনে হবে স্থানীয় কোনও জায়গা থেকে ফোন আসছে। ফলে বিদেশ থেকে ফোন করে কেউ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিলে, পরে তার আর কোনও হদিশ পাওয়া যায় না।

বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন এ ধরনের বেআইনি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশে থাকা তাদের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি এড়াতেই এই কৌশল নেয় জঙ্গিরা।

শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জ খুলে কোটি কোটি টাকার ব্যবসাও হয়। বিদেশ থেকে ফোন এলে সে দেশের মোবাইল সংস্থাকে টাকা দিতে হয়।

ভারতীয় কোনও মোবাইল সংস্থাকেও একই ভাবে টাকা দিতে হয় বিদেশি মোবাইল সংস্থাগুলোকে। কেন্দ্রীয় সরকারের ভাঁড়ারে কর হিসেবে সেই টাকার একটা অংশ জমা পড়ে।
অভিযোগ, বিদেশি সংস্থাগুলি নিজেদের সুবিধার জন্যে ভারতের বেআইনি এক্সচেঞ্জগুলোর সাহায্য নেয়। ফলে ওই মোবাইল সংস্থাকে বেশি টাকা গুনতে হয় না।

কয়েক বছর আগে হুগলির রিষড়ায় এরকমই একটি ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জের হদিশ মিলেছিল। গ্রেফতার হয় বাবা-ছেলে।

ফের এই ধরনের একটি এক্সচেঞ্জের খোঁজ মেলায় গোয়েন্দারা চিন্তায় রয়েছেন। হুগলির আর কোথাও এই ধরনের এক্সচেঞ্জে রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।