বিজনেস পার্টনারকে মেরে ২৫ টুকরো, পরে নিজের স্ত্রীকেও খুন!


ধার নেওয়া টাকা চাওয়ায় বিজনেস পার্টনারকে খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে রাস্তায় ফেলে দিলেন এক ব্যক্তি। ১৪ অক্টোবর, গুরুগ্রামের ঘটনা।

বিজনেস পার্টনার জসকরণ সিংহের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন হরনেক সিংহ। প্রায় দিনই হরনেককে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলতেন তিনি। অভিযোগ, দিচ্ছি, দেবো বলে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিচ্ছিলেন হরনেক। এ দিকে বিরাট অঙ্কের ওই টাকা না পেয়ে ক্রমশ হতাশ হচ্ছিলেন জসকরণ। মনের মধ্যে একটা ক্ষোভও জমা হচ্ছিল। এ নিয়ে তাঁদের দু'জনের মধ্যে বার কয়েক বচসাও হয়। হরনেক জানতেন, তাঁর পক্ষে এত টাকা মেটানো সম্ভব নয়। তাই জসকিরণের হাত থেকে রেহাই পেতে একটা ছক কষে ফেলেন। আর তাতে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী ও এক বন্ধু।

পুলিশ সূত্রে খবর, টাকা চাইতে ১৪ অক্টোবর হরনেকের বাড়িতে ফের হানা দেন জসকরণ। কিন্তু তাঁর জন্য যে ভয়ানক পরিণতি অপেক্ষা করছিল সেটা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি। সে দিন বাড়িতেই ছিলেন হরনেক। তাঁর এক বন্ধুও ছিলেন সেখানে। জসকরণ ঘরে ঢুকতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন হরনেক, তাঁর স্ত্রী গুরমেহর এবং হরনকের বন্ধু। তিন জনে মিলে জসকরণেরহাত-পা বেঁধে ফেলেন। তার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। প্রমাণ লোপাট করার জন্য জসকরণের দেহ ২৫ টুকরো করে সেগুলোকে দুটো প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে হরনেক তাঁর গ্রামের বাড়ি লুধিয়ানার উদ্দেশে রওনা হন। লুধিয়ানা যাওয়ার পথে রাস্তার নির্জন জায়গায় জসকরণের দেহের টুকরোগুলো ফেলতে ফেলতে যান।

কিন্তু ধরা পড়ে যেতে পারেন এই আশঙ্কায় হরনেক স্ত্রীকে বলেন, তাঁদের আত্মহত্যা করতে হবে। কিন্তু হরনেকের এই প্রস্তাব শুনে বেঁকে বসেন গুরমেহর। স্ত্রী রাজি না হওয়ায় ভয় আরও বাড়ে হরনেকের। ২২ অক্টোবর রাতে স্ত্রীর গলা কেটে খুন করেন তিনি। নিজেকে আহতও করেন। স্ত্রীকে খুনের প্রমাণ লোপাট করার জন্য ডাকাতির গল্প ফাঁদেন হরনেক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জসকরণ খুনের তদন্তে নেমে হরনেকের নাম উঠে আসে পুলিশের হাতে। তাঁকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়। জসকরণ খুনের তদন্ত চালাতে গিয়ে গুরমেহর খুনের ঘটনাও সামনে আসে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, গুরমেহর খুনের বিষয়টি চাপা দিতে ডাকাতির গল্প ফেঁদেছিলেন হরনেক। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পর পর জেরার মুখে ভেঙে পড়েন হরনেক। পুলিশের দাবি, জেরায় তিনি দু'টি খুনের ঘটনাই স্বীকার করেছেন। স্থানীয় আদালতে তোলা হলে হরনেককে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।