মাত্রাছাড়া দূষণ, ৪১৭টি ছোট বড় কারখানা বন্ধের নির্দেশ


নয়াদিল্লি: দশেরার পর থেকেই সমস্যা বেড়েছিল৷ সোমবার রাতে তা মারাত্মক আকার নিল৷ দিল্লির সকাল হল ধোঁয়া আর দূষণের হাত ধরে৷ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই বলছে দিল্লির বাতাসে ধূলিকণা ও ধোঁয়াশার পরিমাণ এতটাই বেশি, যে বাতাসের গুণগত মান এখন তলানিতে ঠেকেছে৷

দিল্লির বাতাসে এখন শ্বাস নেওয়া দুষ্কর৷ দশেরাতে পুওর ক্যাটাগরিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল দিল্লির বাতাসের গুণগত মান৷ সেই রাতে বাতাসের দূষণের পরিমাণ পরিমাপ করা হলে দেখা গিয়েছে তার পয়েন্ট ২৭৮৷ আর সেই পয়েন্ট ক্রমশ বাড়ার ফলে উদ্বিগ্ন দিল্লি সরকার৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা হলেও চেষ্টা করছে প্রশাসন৷ প্রায় ৪১৭টি দূষণ উৎপাদনকারী ইউনিট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি সরকার৷

বলা হয়েছে দূষণের পরিমাপ এখন উদ্বেগজনক৷ সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সোমবার রাতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসে দিল্লি প্রশাসন৷ সেই বৈঠকের পর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজল নির্দেশ দেন অত্যধিক ধোঁয়া উৎপাদন করে, এমন সংস্থা ও কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে৷ সেই সংখ্যা প্রায় ১১৩টি৷ এর মধ্যে ৬৭টি অবস্থিত সবচেয়ে দূষিত বাওয়ানা ও নারেলা এলাকায়৷

উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী ইমরান হুসেইন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা এনভায়রনমেন্ট পলিউশন কন্ট্রোল অথরিটি (ইপিসিএ)-এর চেয়ারম্যান ভুরে লাল৷ বৈঠকে স্থির হয় আরও বেশি সংখ্যায় পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে৷ যারা মূলত রাতে দূষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত নারেলা, বাওয়ানা, মুনদকা, নাঙ্গলোই, পাঞ্জাবি বাগ, দ্বারকা, আনন্দ বিহার, ভালাসওয়া ও গাজিপুর এলাকায় টহল দেবে৷ এই পদটির নাম দেওয়া হয়েছে পরিবেশ মার্শাল৷

কুয়াশা নয় ধোঁয়ায় ঢেকেছে দিল্লি
সোমবার রাতে দিল্লিতে বায়ুদূষণের পরিমাপ ছিল ৩৬৭ পয়েন্ট৷ যা উদ্বেগজনক বলেই বলে করছেন পরিবেশবিদরা৷ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এর পরিমাপ ভিন্ন হলেও, স্বস্তিদায়ক ছিল না কোন এলাকাই৷ গাজিয়াবাদে ৪৩০ পয়েন্ট, গুরুগ্রামে ৩৮৯ পয়েন্ট, রোহিণী ৩৬৬ পয়েন্টের রেকর্ড ছুঁয়েছে এদিন৷

বায়ুদূষণের নিরিখে দিল্লির অবস্থা বহুচর্চিত। প্রতি বছরই অক্টোবর-নভেম্বরে সেখানে দূষণের জেরে জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। দূষণের এই বাড়বাড়ন্ত নাগরিক জীবনে নানা সমস্যা ডেকে আনে৷ পরিবেশবিদদের মতে ০-৫০ রেঞ্জের এয়ার কোয়ালিটি ভাল স্তরের৷ ৫১-১০০–সন্তোষজনক, ১০১-২০০ মোটামুটি, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ ও ৪০১-৫০০ উগ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷