রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্তই বাজি পোড়ানো যাবে, রায় সুপ্রিম কোর্টের


মেয়াদ ঠিক দু'ঘণ্টার। রাত আটটা থেকে দশটা। দিওয়ালি ও অন্য উৎসবে এ বার থেকে ঘড়ি ধরেই পোড়াতে হবে বাজি। তা-ও সব ধরনের শব্দবাজি কিংবা আতসবাজি নয়। কম দূষণযুক্ত, পরিবেশবান্ধব বাজি গ্রিন ক্র্যাকারেরই ছাড় থাকছে।

বিভিন্ন উৎসবে লাগামছাড়া দূষণ আটকাতে দেশে বাজি তৈরি, বিক্রি ও ব্যবহারে আজ ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে, দিওয়ালি, অন্য উৎসব ও বিয়েতে বাজি পোড়ানো যাবে রাত ৮ টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। ইংরেজি নববর্ষ ও বড়দিনে রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। শুধু কম দূষণযুক্ত বাজিই পোড়ানো যাবে। ২০০৫ সালের জুলাইয়ের রায়ে বেধে দেওয়া দূষণের মাত্রা মেনেই শব্দবাজি তৈরি করতে হবে। নিষিদ্ধ কালীপটকার চেন। বিচারপতিরা জানিয়েছেন, শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরাই বাজি বিক্রি করতে পারবেন। অনলাইনে বিক্রি চলবে না। যদি কোনও ই-কমার্স ওয়েবসাইট বাজি বিক্রি করে, তারা আদালত অবমাননার দায়ে পড়বে। আর কোথাও নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এসএইচও-দের দায়বদ্ধ থাকতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর। ফলে রাজধানীর জন্য অতিরিক্ত কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেখানে কিছু নির্দিষ্ট এলাকাতেই বাজি পোড়ানো যাবে। এক সপ্তাহের মধ্যে এলাকাগুলি চিহ্নিত করতে হবে। দিল্লি ও সংলগ্ন শহরগুলিতে এক জায়গায় একসাথে বাজি পোড়ানোয় উৎসাহ দিতে কেন্দ্রেকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় এটি কার্যকর করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে।

দূষণ আটকাতে গত বছর ৯ অক্টোবর শব্দবাজি সাময়িক ভাবে নিষিদ্ধও করেছিল শীর্ষ আদালত। দিওয়ালির অন্তত দু'দিন আগে বাজি বিক্রিতে ছাড় দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাতে কান দেয়নি কোর্ট। আজ বাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করে এর নিয়ন্ত্রণে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি এ কে সিক্রি ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ। কোর্টের মতে, ব্যবসায়ীদের জীবিকা ও ১৩০ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যের প্রশ্নে ভারসাম্য থাকা দরকার। সে জন্যই নির্ধারিত সময়সীমা মেনে শুধু কম দূষণযুক্ত বাজি পোড়ানোয় ছাড় দেওয়া হয়েছে।

কোর্টের রায়ের পরে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ''১৯৯৫ সাল থেকেই আমরা দিওয়ালির সময়ে দূষণ আটকানোর চেষ্টা করছি। গত বছরগুলিতে সাফল্যও এসেছে। ফলে আজকের রায়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।'' তিনি জানান, লক্ষ্মীপুজোর পরেই কোর্টের রায় নিয়ে সংশ্নিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবে পর্ষদ।