পেনশন দিতে হবে অবসরের ৭ দিনেই

সব পাওনাগণ্ডাও ওই সময়ে মেটাতে আঞ্চলিক অফিসকে নির্দেশ ইপিএফওর


কলকাতা: পিএফ গ্রাহকের অবসরের পর পেনশন চালু করতে হবে সাতদিনের মধ্যে। যদি কোনও সদস্য মারা যান, তাহলে মৃতের পরিবারকে পাওনাগণ্ডা মেটাতে হবে ওই এক সপ্তাহের মধ্যে। দেশের সব আঞ্চলিক অফিসকে এই নির্দেশ দিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। তারা জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় পিএফ কমিশনাররা এই বিষয়ে প্রতিদিন তদারকি করবেন এবং কোনও সমস্যা হলে, তা নিজে মেটাবেন।

পিএফ নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। সমস্যা মেটাতে এখনও জুতোর শুকতলা খোয়াতে হয় অনেককে। সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ডেথ ক্লেম এবং পেনশন। কোনও গ্রাহক যদি মারা যান, তাহলে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের যা কিছু পাওনা, সেই টাকা পেতে অনেককেই বিরাট ঝঞ্ঝাটের মধ্যে পড়তে হয়, এমনটাই অভিযোগ। পেনশন চালু হতেও অনেক সময় দেরি হয়। মৃত্যুর পর বকেয়া টাকা মেটাতে ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর একটি নির্দেশিকা জারি ক রে ইপিএফও। সেখানে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃতের পরিবারকে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। তাতে যে কাজ হয়নি, তা নয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই যে সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়েছে, এমনটাও নয়।

সমস্যা যে আছে, তা মেনে নিয়েছেন ইপিএফও'র কেন্দ্রীয় অফিসের অতিরিক্ত সেন্ট্রাল পিএফ কমিশনার কে এল গোয়েল। তিনি দিন কয়েক আগে প্রত্যেকটি আঞ্চলিক অফিসকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, পিএফ গ্রাহক মারা যাওয়ার পর, সেই বকেয়া টাকা পেতে দু'বছর পেরিয়ে গিয়েছে, এমন অভিযোগও আছে। বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। তাই এই সমস্যার সমাধানের সময় এসেছে। শুধু বকেয়া টাকা নয়, দ্রুত মেটাতে হবে পেনশনও।

কী নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত সেন্ট্রাল পিএফ কমিশনার? বলা হয়েছে, যেদিন মৃত পিএফ সদস্যের পরিবারের থেকে তাঁর পাওনা দাবি করা হবে, তার এক সপ্তাহের মধ্যে পরিবারের হাতে টাকা তুলে দিতেই হবে। যে অফিস থেকে ওই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টটি পরিচালনা করা হয়, তারা দায়িত্ব নেবে এই বিষয়ে। আবার কর্মীর অবসরের পর পেনশনও চালু করতে হবে সেই সাতদিনের মধ্যেই। অনেক সময় দেখা যায়, যে পিএফ অফিস থেকে কোনও ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট দেখভাল করা হতো, অবসরের পর দেখা যাচ্ছে, সেই এলাকা থেকে চলে গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মী। সেক্ষেত্রে তিনি যে এলাকায় গিয়েছেন, তাঁর পেনশন পেমেন্ট অর্ডার তৈরি হওয়ার কথা সেই এলাকার সংশ্লিষ্ট পিএফ অফিস থেকেই। দপ্তর নির্দেশ দিয়েছে, ঠিকানা বদল হলেও, সাতদিনের বেশি এখানেও সময় নিতে পারবে না পিএফ অফিস।

সময় বেঁধে কাজ করার ক্ষেত্রে এর আগেও পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় পিএফ অফিস। বলা হয়েছে, গ্রাহকের কোনও অভিযোগ জমা পড়লে, সেগুলি মেটাতে হবে ১৫ দিনে। যাঁরা দপ্তরে এসে সরাসরি নিজেদের অভিযোগ জানাতে চান, তাঁদের জন্য তাই একটি আলাদা প্রকল্প নিয়েছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। নাম 'নিধি আপকে নিকট'। এক্ষেত্রে প্রতি মাসের ১০ তারিখে প্রতিটি আঞ্চলিক অফিসে দরবার বসাবে দপ্তর, যেখানে অভিযোগ জানাবেন গ্রাহকরা। সমাধানও হবে সেখানেই। কিন্তু প্রচারের অভাবে সেই প্রকল্প তেমন সফল হয়নি। গত আগস্টে একটি নোটিস জারি করে ইপিএফও। সেখানে বলা হয়, ওই প্রকল্পের আওতায় আসা অভিযোগগুলি মেটাতে হবে সংশ্লিষ্ট মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে।