কোহিনুর হীরে উপহার দেওয়া হয়নি! সমর্পণ করা হয়েছিল ব্রিটেনের রানির কাছে


সেই কবে থেকে শুনে এসেছি লাহোরের রাজা নাকি ইংল্যান্ডের রানিকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন কোহিনুর হীরে। কিন্তু সম্প্রতি 'আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া' (এএসআই) যা বলেছে তাতে ইতিহাসটাই পাল্টে যেতে বসেছে। আরটিআই সূত্র অনুযায়ী ১৭০ বছর আগে ব্রিটেনের রানিকে 'উপহার' নয়, বরং রানির কাছে সমর্পণ করা হয়েছিল ১০৮ ক্যারাটের কোহিনুর।

লুধিয়ানার এক সমাজকর্মী সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন কোহিনুর আদৌ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল কিনা। প্রশ্নের উত্তরে এএসআই তার জবাব দিয়েছে। তবে এএসআই-এর ১০ অক্টোবরের লিখিত রিপোর্ট যা বলছে তা কিন্তু শীর্ষ আদালতের ২০১৬-এর বিবৃতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কোহিনুর হীরে চুরিও যায়নি, জোর করে ব্রিটিশরা কেড়েও নেয়নি। বরং তৎকালীন পাঞ্জাব শাসক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে উপহার দিয়েছিলেন তা, কেন্দ্র থেকে সুপ্রিম কোর্টকে এরকমটাই বলা হয়েছিল।

রোহিত সাভারওয়াল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি মাস খানেক আগে তথ্যের অধিকারের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে তাঁর প্রশ্ন রেখেছিলেন। তাঁর অনবগতিতেই প্রশ্ন পাঠানো হয় এএসআই-তে।
এএসআই প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে ১৮৪৯ সালে লাহোরের মহারাজা দলীপ সিং এবং লর্ড ডালহৌসির মধ্যে লাহোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুসারেই ইংল্যান্ডের রানির কাছে সমর্পণ করা হয় কোহিনুর।

চতুর্দশ শতকের শুরুর দিকে দক্ষিণ ভারতে এই কোহিনুরের খোঁজ পাওয়া যায়। কোহিনুর শব্দের অর্থ আলোর পাহাড়। চুক্তি অনুযায়ী মহারাজা রঞ্জিত সিং সুজা উল মুল্ক-এর কাছ থেকে যে কোহিনুর হীরে নিয়েছিলেন, লাহোরের মহারাজা সেটি ইংল্যান্ডের রানির কাছে সমর্পণ করবেন। চুক্তির ভাষাই বলে দিচ্ছে দলীপ সিং-এর ইচ্ছেয় কিছুই হয়নি। তিনি তখনও সাবালকত্ব অর্জন করেননি।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক সংগ্রহশালায় গিয়ে কোহিনুর হীরে দেখেন রোহিত সাভারওয়াল। সেখানে এটিকে 'উপহার' হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে। দেশে ফিরে তথ্যের আধিকারের ভিত্তিতে তিনি তাঁর প্রশ্ন রাখেন। তাঁর কথায়, "কেন্দ্র এবং এএসআই কোহিনুর নিয়ে দু'রকমের মতামত দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে"।