ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালু করল বাংলাদেশ


ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের আইন ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনল শেখ হাসিনা সরকার। ভুল তথ্য বা ধর্মীয় উসকানিমূলক কিছু প্রকাশ হলেই সরকার কড়া ব্যবস্থা নিতে পারবে। আইনে থাকছে সোশ্যাল সাইটে ভুয়ো বার্তা ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠিনতর পদক্ষেপ।

এসব নিয়েই বাংলাদেশে চালু হল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ সেই বিলে সই করতেই আইনটি কার্যকর হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একের পর এক ভুয়ো ও উত্তেজনাকর ছবি-তথ্য ছড়ানোর ঘটনায় ধর্মীয় গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়েছে বাংলাদেশে। আক্রান্ত হয়েছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন,যাদের অপরাধী মন নেই, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নোংরামি ঠেকাতেই এই আইন করা হয়েছে।


এক নজরে আইনটি-
• নতুন আইনের ১৪টি ধারার অপরাধ হবে অ-জামিনযোগ্য। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় বসে বাংলাদেশের কোনও নাগরিক এই আইন লঙ্ঘন করলেই তার বিরুদ্ধে বিচার করা যাবে।

• আক্রমণাত্মক, ভুয়ো ও ভীতি প্রদর্শক তথ্য প্রকাশ, মানহানিকর তথ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, অনুমতি ছাড়া কোনও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার করলে কারাদণ্ডের বিধান থাকছে।

• ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, আইনটি কার্যকর হওয়ার পরেই পূর্ববর্তী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল হবে। এতদিন পর্যন্ত এই ধারায় ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে বিচার হয়ে আসছিল।

নতুন আইনের বলে পুলিশ পরোয়ানা ও অনুমোদন ছাড়াই তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবে। এখানেই মিশে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের সেই কুখ্যাত অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট। ১৯২৩ সালে এই আইন চালু করে সরকার বিরোধী যে কাউকে গ্রেফতারের ক্ষমতা ছিল ব্রিটিশদের।

অভিযোগ উঠছে, ডিজিটাল আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার ব্রিটিশ আমলের কুখ্যাত 'অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট' প্রয়োগ করতে চায়। তবে সেসব উড়িয়ে দিয়েই শেখ হাসিনার সরকার অবশেষে বাস্তবায়িত করল ডিজিটাল আইন।

এদিকে আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমাট হতে শুরু করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রকের দাবি, যারা এই আইনের বিরোধিতা করছেন বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যম তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কিছু সংশোধন করা হবে।