গ্রাহকদের ছবি দেখানোর পর নিজের বাড়িতেই মধুচক্র চালাতেন গোপা, স্বীকারোক্তি অভিযুক্তের


মোবাইলে মহিলাদের ছবি দেখানো হত গ্রাহকদের। এরপর হত টাকার লেনদেন। জলপাইগুড়িতে বিমা কর্মী গোপা শর্মা খুনের ঘটনায় এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি মূল অভিযুক্ত সনত্ মিত্রের। জেরায় সনত মিত্র জানিয়েছেন, গোপাদেবীর ঘরেই বসত মধুচক্রের আসর। সেখানেই আসতেন গ্রাহকরা।   
সনত্ আরও জানিয়েছেন, যৌনকর্মীদের পাওনা মেটানোর জন্য তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন গোপা দেবী। কিন্তু গোপাকে খুনের উদ্দেশ্য ছিল না সনতের। তাঁর দাবি, গোপাদেবীর খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচৈতন্য করে দিয়েছিলেন। তিনি ঘুমের মধ্যে ঢলে পড়তেই সোনা ও টাকা হাতিয়ে নিতেন সনতের দুই সাগরেদ কৃষ্ণ দাস ও পাপাই রায়। গভীর রাতে জলপাইগুড়ির কেরানি পাড়ায় তাঁরা যখন মিলিত হন, তখন গোপা শর্মার মৃত্যুর কথা জানতে পারেন। আলিপুরদুয়ারের নিষিদ্ধপল্লীতে গা ঢাকা দেন তাঁরা। 

গত ১২ অক্টোবর জলপাইগুড়ি পুরাতন পান্ডাপাড়ায় বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় গোপা শর্মার রক্তাক্ত দেহ। বন্ধ ঘর থেকে এলআইসি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার ১৩ দিনের মাথায় বিমা কর্মী গোপা শর্মা খুনের কিনারা করে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ। খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ৪ যুবককে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃতরা হলেন সনত্ মিত্র, শঙ্কর দাস,কৃষ্ণ দাস ও পাপাই রায়। ধৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ২২ থেকে ৩২-এর মধ্যে। সনত্ মিত্র ও শঙ্কর দাসকে আলিপুরদুয়ার থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে, কৃষ্ণ দাস ও পাপাই রায়কে নিউ জলপাইগুড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃত চার অভিযুক্ত যুবকের প্রতেকেই শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা।

গোপা শর্মার খুনের পর বাড়িতে দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ করেছিলেন এলাকাবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, কয়েক বছর আগে গোপা শর্মার স্বামী মারা যান। তারপর থেকে বাড়িতে একাই ছিলেন ওই মহিলা। বাড়িতে অপরিচিত যুবকদের আনাগোনা লেগে ছিল। বাড়িভাড়ার আড়ালে মধুচক্র চলছিল বাড়িতে। জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, গোপা শর্মার বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের লোক আসত। সনত্ মিত্রও "বন্ধু বেশে' আসে। পরে সনত মিত্র নামে ওই যুবক গোপা শর্মাকে 'মামী' বলে ডাকত ও তাঁর ফাইফরমাশ খাটত।