সন্তান শোকে স্ত্রীর নলি কেটে, মুখ চিরে দিয়ে খুন! আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীরও


সন্তান মৃত্যুর যন্ত্রণায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুনের পর আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করল স্বামী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘাতে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অভিযুক্ত স্বামী হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার বীভত্সতায় শিউরে উঠছেন পাড়া প্রতিবেশীরা।

দিঘার পদিমা গ্রামের বাসিন্দা নিত্যানন্দ সুরের সঙ্গে ১১ বছর আগে বিয়ে হয় অষ্টাদশী জ্যোত্স্না সুরের। বিয়ের পর দম্পতির সুখের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু বিয়ের ১১ বছর ঘুরে গেলেও এখনও সন্তান সুখ পায়নি দম্পতি। এই ১১ বছরে দু-দুবার জ্যোত্স্নার কোল আলো করে ফুটফুটে সন্তান জন্মায়। কিন্তু, জন্মের দুই থেকে তিনদিনের মাথাতেই মৃত্যু হয় সন্তানদের।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেই থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। দম্পতির মনে আশঙ্কা জন্মেছিল, আবার সন্তান জন্ম নিলে, সেই সন্তানও বাঁচবে না। এই পরিস্থিতিতে চরমে উঠেছিল দাম্পত্য কলহ। তাঁদের আর সন্তান হবে না বলেই ধরে নিয়েছিল নিত্যানন্দ ও জ্যোত্স্না।

অভিযোগ, এরপরই এদিন সকালে বিবাদ চরম আকার ধারণ করে। কথা কাটাকাটি হওয়ার সময়ই সকাল ৮টা নাগাদ ছুরি দিয়ে স্ত্রী জ্যোত্স্নার গলার নলি কেটে দেয় নিত্যানন্দ। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছুরি দিয়ে মুখও ফালা ফালা করে দেয়। তারপরই নিজে কীটনাশক খায় নিত্যানন্দ। এরপর নিজেও নিজের গায়ে ছুরি চালিয়ে দেয়।

এদিকে তুমুল বচসা আর তারপরই আর্ত চিতকার শুনে কিছু একটা ঘটেছে বুঝতে পারেন প্রতিবেশীরা। ছুটে আসেন তাঁরা। এদিকে ঘরের দরজা, জানলা বন্ধ। শেষমেশ জানলা ভেঙে ঘরের ভিতরের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন পাড়া পড়শিরা। দেখেন, খাটের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্ত্রী জ্যোত্স্না। আর মেঝেতে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে স্বামী নিত্যানন্দ।

সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি করে আহত স্বামীকে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন স্বামী।