শিলিগুড়িতে উদ্ধার ৫৫ কেজি সোনা, গ্রেপ্তার ২


ঠিক এক মাসের মাথায় শিলিগুড়িতে ফের বিপুল পরিমাণ চোরাই সোনা ধরা পড়ল। শুক্রবার রাতে ভুটান থেকে জয়গাঁ হয়ে শিলিগুড়িতে পাচার হওয়ার পথে বর্ধমান রোডের একটি শপিংমলের সামনে থেকে ৫৫ কেজি চোরাই সোনা উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টিলিজেন্স)। এই নিয়ে গত ৪৮ ঘণ্টায় দিল্লি, শিলিগুড়িসহ দেশের পাঁচ জায়গা থেকে মোট ১০০ কেজি চোরাই সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর। এর মূল্য প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। ধনতেরাসের আগে সোনার দাম ও চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। দিন দিন সোনার চাহিদা বেড়েই চলেছে। সেই কারণেই সোনা পাচারকারীরা অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বিলাসবহুল গাড়িতে শিলিগুড়িতে ওই সোনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। চালকের আসনের নীচে বিশেষ খাপ করে ওই সোনা পাচার হচ্ছিল। ওই ঘটনায় পাচারকারী দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা সোনায় সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও চীনের ছাপ রয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর শিলিগুলির সেভক রোড এলাকা থেকে ২৭ কেজি সোনা সহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়।

ধৃতদের শনিবার শিলিগুড়ির অ্যাডিশনাল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ফোর্থ কোর্ট) অভিষেক মান্নার এজলাসে তোলা হলে বিচারক চার দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ডিআরআইয়ের পক্ষের আইনজীবী ত্রিদীপ সাহা জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ধৃতরা আন্তর্জাতিক সোনা পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত কি না তা দেখা হচ্ছে। আদালত ধৃতদের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হোফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। গত দুই বছরে শিলিগুড়িতে ৫৩৫ কেজি সোনা ডিআরআই উদ্ধার করেছে।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম গণেশ ভগবান কুটে এবং নবনাথ কালাপ্পা কুটে। গণেশের বাড়ি মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার পূজারবাদী গ্রামে। নবনাথের বাড়ি একই জেলার দিঘাঞ্চি গ্রামে। ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেছে ওই চোরাই সোনা ভুটান থেকে আনা হচ্ছিল।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে ডিআরআইয়ের বিশেষ টিম শহরের বর্ধমান রোডের একটি শপিং মলের সামনে একটি গাড়ি আটকায়। গাড়ির দুই যাত্রীকে জেরা করে সোনার সন্ধান পাওয়া যায়। ধৃতরা জেরায় স্বীকার করে, তাদের কাছে ৫৫টি সোনার বাট রয়েছে। প্রতিটি এক কেজি ওজনের। ডিআরআইয়ের ধারণা, ওই সোনা চীন থেকে ভুটানে আনা হয়েছিল। সেখানে থেকে জয়গাঁ হয়ে শিলিগুড়ি আনা হচ্ছিল। 
বহুদিন ধরেই শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে সোনা পাচারকারীদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। আগে চোরাই সোনা ভারত-মায়ানমার হয়ে মণিপুর দিয়ে এদেশে ঢুকে সড়ক পথে শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতায়, দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হতো। এখন চীন থেকে নাথুলা বর্ডার পেরিয়ে গ্যাংটক হয়ে শিলিগুড়ি ঢোকে। আবার চীন থেকে ভুটান হয়ে জয়গাঁ হয়ে এদেশে ঢোকার রুটও চালু রয়েছে। গত দু'বছরে এই পথে একাধিক সোনা পাচারকারী ধরা পড়েছে। উদ্ধার হয়েছে কয়েকশো কেজি সোনা। বার বার ধরা পড়ায় মাঝে মধ্যেই রুট বদল করছে পাচারকারীরা। কিন্তু, তাতেও সব সময় তারা রক্ষা পাচ্ছে না।