মেয়ের দেহ কাঁধে ৮ কিমি হাঁটলেন বাবা


গজপতি (ওড়িশা) : স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলেছেন দানা মাঝি। পাশে হাঁটছে তাঁর ১২ বছরের মেয়ে চাঁদনি। সেই ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। আবারও একই ছবি। তবে এবার আর ঘটনাস্থান ওড়িশার কালাহান্ডি নয়। যদিও এবারের ঘটনাটিও সেই রাজ্যের গজপতি জেলার আতঙ্কপুর গ্রামের। মৃত মেয়ের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলেছেন বাবা। সাত বছরের মেয়ে ববিতার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে এভাবেই ৮ কিলোমিটার হাঁটেন মুকুন্দ ডোরা। সাইক্লোন তিতলির কারণে ধসে মৃত্যু হয়েছিল ববিতার।

তিতলির পর ববিতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজ্য সরকার গতকাল স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ববিতাকে মৃত ঘোষণা করে। ১১ অক্টোবর ববিতা নিখোঁজ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তার বাবা। বিশেষ ত্রাণ কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, "সাইক্লোন তিতলির সময় মহেন্দ্রগিরি পাহাড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় ভূমিধসের কারণে ববিতা নিখোঁজ হয়ে যায়।"

মেয়ের মৃতদেহ কাঁধে বয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মুকুন্দ ডোরা বলেন, "বুধবার বিকেলে আমরা একটি নালার কাছে মেয়ের দেহ খুঁজে পেয়েছিলাম। পুলিশকে জানানো হয়। তারা আজ সকালে আমাদের গ্রামে এসে মৃতদেহের ছবি তুলে নিয়ে যায়।" ময়নাতদন্তের জন্য দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা পুলিশ করেনি বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, "পরিবর্তে তারা (পুলিশ) আমাকেই দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। আমি গরিব, হাসপাতালে দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করতে পারিনি। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের কারণে আমার গ্রামের রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। তাই দেহ ব্যাগে ভরে কাঁধে নিয়ে রওনা দিই।"

সরকারি তরফে জানানা হয়েছে, রাস্তাতেই মুকুন্দ ডোরার জন্য একটি অটোর ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। জেলা কালেক্টর অনুপম শাহ জানান, তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, "অভিযোগটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি তদন্ত শুরু করেছি।"