রাজ্যে ৫ দিনের মধ্যে ৩ জনসভায় অমিত, রথের চোখধাঁধানো সূচনার পরিকল্পনায় বিজেপি

রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম!

রবীন্দ্র কাব্যের পঙ্‌ক্তি বলেই চিনে নেবেন যে কোনও বাঙালি। কিন্তু আপাতত এটা রবীন্দ্র কাব্য নয়, আপাতত এ হল বিজেপির রথযাত্রার সূচনা লগ্নের পরিকল্পনা।

৫, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর রাজ্যের তিন প্রান্ত থেকে বিজেপির তিনটে 'রথ' যাত্রা শুরু করছে। তিন রথের উদ্বোধন করবেন তিন নেতা— প্রথমে এমনটা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরে বিজেপি সিদ্ধান্ত নেয়, তিন যাত্রারই সূচনা করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই সিদ্ধান্তই বুঝিয়ে দিয়েছিল, বাংলায় এই 'গণতন্ত্র বাঁচাও রথযাত্রা'কে কোন মাত্রায় তুলে নিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি। অক্টোবরের শেষ প্রান্তে পৌঁছে জানা গেল, পরিকল্পনা আরও বড়। শুধু 'রথযাত্রা' আর 'মহা ধুমধাম'-এ সন্তুষ্ট থাকতে চাইছে না বিজেপি। সূচনার দিনেই 'লোকারণ্য' চাইছে সর্বভারতীয় নেতৃত্ব।

বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলার তিন প্রান্তে যে যে তারিখে রথযাত্রার সূচনা করবেন অমিত শাহ, সেই সেই তারিখেই সূচনাস্থলের কাছাকাছি কোনও মাঠে বড়সড় জনসভাও করবেন তিনি। তিন সভায় প্রায় তিন লক্ষের কাছাকাছি জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে দলের সামনে।

৫ ডিসেম্বর প্রথম রথটা যাত্রা শুরু করবে তারাপীঠ থেকে। তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিয়ে অমিত শাহ নিজেই সওয়ার হবেন রথে। কাছাকাছি শহর রামপুরহাট। সেখানকার রেল ময়দানে হবে জনসভা। সভা শেষে রথ রওনা বোলপুর বা সিউড়ির দিকে।

৭ ডিসেম্বর কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে দ্বিতীয় রথে সওয়ার হবেন অমিত শাহ। রথ যাবে রাসমেলার ময়দানে বা অন্য কোনও বড় মাঠে। অমিত শাহের জনসভা হবে সেখানেই।

৯ ডিসেম্বর তৃতীয় রথের যাত্রা শুরু হবে সাগর থেকে। সেখানেও কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দিয়ে রথে সওয়ার হবেন বিজেপি সভাপতি। তার পরে ভেসেলে চড়বে রথ। কুলপি পৌঁছে জনসভা ভাষণ দেবেন অমিত শাহ।

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বললেন, ''রাজ্যের ৪২টা লোকসভা কেন্দ্রকেই স্পর্শ করবে আমাদের রথগুলো। ৪২টা লোকসভা কেন্দ্রেই একটা করে বড় জনসভার আয়োজন হবে। প্রত্যেকটা জনসভাতেই জাতীয় স্তরের কোনও না কোনও নেতা যোগ দেবেন। তবে স্বাভাবিক ভাবেই সবচেয়ে বড় জনসভা রামপুরহাট, কোচবিহার এবং কুলপিতেই হচ্ছে। কারণ অমিত শাহ নিজে ওই তিন সভায় থাকছেন।'' রামপুরহাট এবং কোচবিহারে ১ লক্ষের বেশি লোক জমানোর লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। খবর বিজেপি সূত্রেরই। তবে কুলপিতে অতটা জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়নি হবেই খবর। প্রথমত, নদী-নালা, খাঁড়ি, ব-দ্বীপ আর জঙ্গলের কারণে ওই এলাকায় জনঘনত্ব কম। দ্বিতীয়ত, বিজেপির সংগঠন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনও খুব জোরদার নয়। সে সব কথা মাথায় রেখেই কুলপিতে ৫০-৬০ হাজারের জমায়েতের লক্ষ্য নিয়ে বিজেপি এগোচ্ছে বলে খবর। তবে কোথায় কত জমায়েতের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বিজেপির কোনও নেতা মুখ খুলতে চাননি।