৯৫৭ ফুড ইন্সপেক্টর পদে পরীক্ষা দেবেন ১১ লক্ষ


কলকাতা: রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ফুড ইন্সপেক্টর পদে ৯৫৭ জন কর্মী নিয়োগের পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক হল। পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) বুধবার রাতে জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ২৭ জানুয়ারি রাজ্যব্যাপী লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই পরীক্ষায় ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল মাধ্যমিক। সাধারণ প্রার্থীদের জন্য বয়সসীমা ছিল চলতি বছরের ১ জানুয়ারি অনুযায়ী ১৮ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য অতিরিক্ত পাঁচ বছর ছাড় এবং ওবিসিদের জন্য তিন বছর ছাড় দেওয়া হয়েছে। পিএসসি'র কাছে এই পদের জন্য ১১ লক্ষ ৬ হাজার ৩৪৭ আবেদন জমা পড়েছে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য গোটা রাজ্যে তিন হাজারের বেশি পরীক্ষাকেন্দ্র বেছেছে পিএসসি। দুপুর ১টা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। এমসিকিউ ধাঁচে উত্তর দিতে হবে। এই পরীক্ষায় যাঁরা সফল হবেন, তাঁদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে। তাতে উত্তীর্ণ হলে মিলবে চাকরি।

পিএসসি'র চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দাশগুপ্ত বলেন, গত ২২ আগস্ট ফুড ইন্সপেক্টর পদে কর্মী নিয়োগের জন্য আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। আবেদনের শেষ দিন ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যে থেকে ১১ লক্ষের বেশি আবেদনকারীকে পরীক্ষায় বসার জন্য বাছা হয়েছে। রাজ্যব্যাপী পরীক্ষার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছি। চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে।

পিএসসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৯৫৭টি শূন্যপদের মধ্যে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ৪৫৪টি পদ রয়েছে। তফসিলি জাতির জন্য ২০৮টি, তফসিলি উপজাতির জন্য ৫৮টি, ওবিসি-এ'র জন্য ৯৮টি, ওবিসি-বি'র জন্য ৬৯টি, এক্স সার্ভিসম্যানদের জন্য ৫০টি এবং স্পোর্টস পার্সোনালিটিদের জন্য ২০টি পদ সংরক্ষিত রয়েছে। পিএসসি সূত্রের খবর, নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে রাজ্য সরকার তথা নবান্ন থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পিএসসি প্রাথমিকভাবে ৫ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষার দিন ঠিক করেছিল। গত বুধবার পিএসসি অফিসে পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে থাকা রাজ্য ও জেলা আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। জেলার প্রতিনিধিরা জানান, ৫ জানুয়ারি শনিবার। তাই তাঁরা ২৭ জানুয়ারি, রবিবার দিনটি প্রস্তাব করেন। অবশেষে ওই দিনটিই চূড়ান্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, পিএসসির অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) শিবপ্রসাদ মিশ্র বলেন, রা঩জ্যের প্রত্যেকটি জেলা সদরে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। সমস্ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। যেমন বারুইপুরে ৩০ হাজার, বারাকপুরে ৫২ হাজার, বারাসতে ৭০ হাজার, বাঁকুড়ায় ৫০ হাজার, সিউড়িতে ৪০ হাজার, বহরমপুরে ৭৬ হাজার, মালদহে ৭৩ হাজার, ডায়মন্ডহারবারে ১৫ হাজার, কৃষ্ণনগরে ৮৪ হাজার, মেদিনীপুরে ৬০ হাজার, তমলুকে ৪০ হাজার, কোচবিহারে ৪৫ হাজার, শিলিগুড়িতে ৩৫ হাজার এবং চুঁচুড়ায় ৪৬ হাজার প্রার্থী পরীক্ষা দেবেন।

সাধারণ এবং ওবিসি ভুক্ত পরিক্ষার্থীরা অনলাইনে ফর্ম ফিল-আপ করে ১১০ টাকা করে চালান দিয়েছিলেন। ফুড ইন্সপেক্টর পদে চাকরি পেলে গ্রুপ-সি পদমার্যাদার সমতুল বেতন মিলবে। তাঁদের বেতনক্রম পে-ব্যান্ড টু এর অধীনে থাকবে। পে-ব্যান্ডের সীমা হবে ন্যূনতম ৫৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ২০০ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে গ্রেড-পে বাবদ ২ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে থাকবে মহার্ঘ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা এবং বাড়িভাড়া বাবদ ভাতা।

উল্লেখ্য, অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের নিরিখে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হয়েছিল গ্রুপ ডি পদের জন্য। অষ্টম শ্রেণীর যোগ্যতামানের ওই পরীক্ষায় প্রায় ১৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী বসেছিলেন। মাত্র ছ'হাজার পদের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল ২৪ লক্ষ। পিএসসি কর্তাদের দাবি, গ্রুপ ডি'র ওই পরীক্ষার পর ফুড ইন্সপেক্টর পদের পরীক্ষাটি নতুন বছরে দ্বিতীয় বৃহৎ পরীক্ষা হতে চলেছে। তবে, এই পরীক্ষা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সফল হয়, তার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। পরিবহণ থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সহ সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।