যুদ্ধ আপাত স্থগিত! সন্ধি প্রস্তাবেই সায় আরবিআই ও কেন্দ্রের


আপাতত যুদ্ধ শেষ। সন্ধি প্রস্তাবেই একটা সহাবস্থান খুঁজে বের করল ভারতীয় রিজার্ভা ব্য়াঙ্ক ও কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে আরবিআই ও কেন্দ্রের মধ্যে বৈরিতা প্রকাশ্যে চলে এসেছিল এবং তার জেরে দু'পক্ষেরই একাধিক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল তার লাগামে এখন টান পড়ছে।

সোমবার সকাল থেকে ভারতীয় রিজার্ভ ব্য়াঙ্ক-এর বোর্ডের বৈঠক শুরু হয়েছিল। প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকে একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যে বিষয়গুলি নিয়ে বারবার নানা সংশয় ও বিতর্ক এবং জটিলতা দেখা যাচ্ছে সেই বিষয়গুলিতে একটা সমঝোতা সূত্র বের করতে একাধিক বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বৈঠকে।

এমনকী ভারতীয় রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের কাছে থাকা অতিরিক্ত ৩ ৬০,০০০ টাকা হস্তান্তর নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাতেও আপাতত শান্তি জল পড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ এই অতিরিক্ত অর্থ কীভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের জিম্মা থেকে সরকারের ঘরে নিয়ে যাওয়া হবে তা একটি কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আরবিআই বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে চলেছে সূত্রের খবর। সংবাদসংস্থা রয়টার্সও জানিয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণ পরিকাঠামোর পুনর্গঠনের ব্য়াপারেও একটা ঐক্যমত তৈরি হয়েছে এদিনের বৈঠকে। লিকুইডিটি ইস্যু নিয়েও যে একটা জটিলতা তৈরি হয়ে আছে ১৪ ডিসেম্বরের বৈঠকেও সেটা আরবিআই তুলবে বলে সূত্রের খবর।

এদিকে বৈঠক শেষ হতেই একটি লিখিত বিবৃতি দেয় আরবিআই। তাতে মুম্বই-এ হওয়া এই ম্যারাথন বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি জানিয়ে দেওয়া হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, 'বাসেল রেগুলেটরি ক্যাপিটাল ফ্রেমওয়ার্ক থেকে শুরু করে এমএসএমই-র স্কিমগুলির পুনর্গঠন, প্রম্পট কারেকটিভ অ্য়াকশন বা পিসিএ-র অধীনে ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য, ইকোনমিক ক্যাপিটাল ফ্রেমওয়ার্ক বা ইসিএফ-র মতো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।' ইসিএফ-এর বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য যে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হচ্ছে তাও এই বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে কীভাবে সদস্য়রা আসবেন এবং তাঁদের উপরে কী ধরনের শর্ত আরোপ করা হবে তা সরকার ও আরবিআই মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

এমএসএমই-তে ২৫০ মিলিয়ন পর্যন্ত ঋণগ্রহিতাদের স্ট্রেট স্ট্যান্ডার্ড অ্য়াসেট-এর আওতার স্কিম-কে পুনর্গঠন করার বিষয়টি আরবিআই-এর খতিয়ে দেখা উচিত বলেও বোর্ড এদিন পরামর্শ দিয়েছে। আর্থিক সামর্থ্য খতিয়ে দেখে এই ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে বলেও মত প্রকাশ করেছে বোর্ড।

বোর্ড সিআরএআর ৯% বজায় সিদ্ধান্ত নিলেও ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার বা সিসিবি-র অধীনে ৬২৫%-এর শেষ ট্র্যাঞ্চের ট্রান্সাকশন-কে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে। পিসিএ-এর আওতায় ব্যাঙ্কগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখার ভার আরবিআই-এর বোর্ড ফর ফিনান্সিয়াল সুপারভিশন বা বিএফএস -এর হাতে সঁপে দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে।