"পুলিশ ভয় না পেলে আগেই মারা যেত কাসভকে"

বাঁদিকে আজমল কাসভ (এই ফোটোটাই তুলেছিলেন সেবি)

     
মুম্বই : "ওইরাতে পুলিশ ভয় পেয়েছিল। কাসভকে যেতে দিয়েছিল। নাহলে আগেই খতম করা যেত তাকে। অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচত।" ২৬/১১ হামলার ১০ বছর পর স্মৃতি রোমন্থন করলেন সেবাস্তিয়ান ডি'সুজ়া ওরফে সেবি।

সেবি নামটা অনেকের কাছেই অপরিচিত। তবে, সাংবাদিক মহল তাঁকে স্যালিউট করে। কারণ, তাঁর একটা ফোটোতেই ধরা দিয়েছিল কাসভ। আজমল কাসভ। হাতে AK-47। মুম্বই হামলার একমাত্র জীবিত জঙ্গি ছিল সে। তার কাছ থেকে জানা গেছিল, পাকিস্তানে বসে হাফিজ় সইদ ও তার জঙ্গি সংগঠন কীভাবে ভারতে হামলার ছক কষেছিল।

১০ বছর পরও সেবির মনে আছে সেই রাত। বললেন, "তখন রাত সাড়ে ৯টা হবে। আমি অফিসে। খবর পেলাম ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে (CST) গুলি চলেছে। বেরিয়ে পড়লাম। হাতে শুধু নিকনের একটা ক্যামেরা আর লেন্স। আমার ট্রেন পৌঁছাল CST-তে। আমি একটা বগিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখলাম কাসভকে। বন্দুক হাতে। প্রথমেই ফোটো তোলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, অ্যাঙ্গেল ঠিক আসেনি। পরের কোচে চলে যাই। সেখান থেকে ভালো করে ছবিটা তুলি। আমি দেখলাম ওরা আমাকে দেখছে। তাতেও কিছু এসে গেছে বলে মনে হয়নি।"

এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন সেবি। বলেন, "আমি দেখলাম নির্বিচারে ওরা গুলি চালাচ্ছে। এদিকে, স্টেশনের সামনেই দুটি পুলিশ ব্যাটেলিয়ন ছিল। ওরা কিছুই করেনি। যদি পুলিশ আগেই কাসভ আর তার সঙ্গীদের মারত তাহলে এত নিরীহ মানুষের প্রাণ যেত না।" 
মুম্বই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ১৬৬ জন। আহত হন হাজারেরও বেশি মানুষ। ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসেই শুধু মারা গেছিলেন ৫৮ জন। তবে, এত বড় জঙ্গি হানার মাঝেও স্নায়ু স্থির রেখে কাজের কাজটা করেছিলেন সেবি। তুলে রেখেছিলেন কাসভের ফোটো। যা তাঁকে এনে দিয়েছিল ওয়ার্ল্ড প্রেস ফোটো অ্যাওয়ার্ড। তাঁর এই ফোটো কাসভের মামলার শুনানিতে অনেকটাই সাহায্য করেছিল। ২০১২ সালে কাসভের ফাঁসি হয়। সেবছরই অবসর নেন সেবি। এরপর থেকে তিনি গোয়াতেই থাকেন। 

অবসরের পর আঁকাআঁকি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন সেবি। ২৬/১১ নিয়ে তিনি বলেন, "ওটা পুরোনো ছবি। আমি আমার স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে চাই।"