মোদীর রাজ্য গুজরাতে এ বার ‘নজরে’ মুসলিম পড়ুয়ারা!


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্যে মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। গুজরাতের বিজেপি সরকারের উদ্যোগে এই কাজ করা হচ্ছে বলে শুক্রবার একটি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

রাজ্য সরকারের আচরণে আতঙ্কিত অনেক পড়ুয়ার অভিভাবক বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এই কাজ 'সংবিধানবিরোধী' বলে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা।

মুসলিম পড়ুয়া চিহ্নিতকরণ সম্পর্কে সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় যে সব পড়ুয়া বসতে চলেছেন, তাঁদের একটি অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। সেই ফর্মে পড়ুয়ার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, তিনি 'সংখ্যালঘু' কিনা? উত্তর 'হ্যাঁ' হলে ফর্মে দু'টি বিকল্প থাকছে— তিনি মুসলিম না অন্য ধর্মের?

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাতে আরও অন্তত চার শ্রেণির ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা থাকেন। খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈন। কিন্তু গুজরাত সরকার শুধু মাত্র মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের কাছেই তাঁদের পরিচয় জানতে চাইছে। মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়ের প্রশ্ন, কেন গুজরাত সরকার এই সব তথ্য সংগ্রহ করছে? এই সব তথ্যের অপব্যবহার হবে বলে আশঙ্কা অনেকের।

দ্বাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়ার বাবার কথায়, ''ব্যাপারটি অবাক করার মতো। অনলাইন ফর্মের তথ্য যদি অন্য কাজে লাগানো হয়, তাই খুব ভয়ে আছি।'' দ্বাদশ শ্রেণির আর এক ছাত্রের বাবা একটি রেস্তরাঁ চালান। তিনি বলেছেন, ''২০০২ সালের আগে গুজরাত সরকার এই রকমই একটা ব্যাপার চালু করেছিল। তখন প্রতিটি থানা তাদের এলাকার মুসলিম ব্যবসায়ীদের পরিচয় জানাতে বলেছিল। তার পরেই রেস্তরাঁ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই কাজের জন্য দাঙ্গাবাজরা সরকার এবং পুলিশের সংগ্রহ করা তথ্যই কাজে লাগিয়েছিল। এখন আমি আমার ছেলের জন্য ভয় পাচ্ছি। গুজরাত সরকার কেন জানতে চাইছে, কোনও ছাত্র মুসলিম না অমুসলিম।''

গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন জিগ্নেশ মেবাণী, হার্দিক পটেলের মতো বিরোধী নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, গুজরাত সরকার মুখে জাতীয়তাবাদের কথা বললেও এ ভাবেই ধর্মের নামে ভাগাভাগি করছে। গোটা বিষয়টি অসাংবিধানিক বলেও দাবি করেন জিগ্নেশ। গুজরাত সেকেন্ডারি এবং হায়ার সেকেন্ডারি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ জে শাহের অবশ্য দাবি, ২০১৩ সাল থেকে এই ধরনের ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা চলে আসছে।