শবরীমালা মামলায় নয়া মোড়, নিজের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনায় রাজি শীর্ষ আদালত


শবরীমালায় আয়াপ্পাস্বামীর মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বয়সী মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে নিজের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার  সিদ্ধান্ত নিল শীর্ষ আদালত। আগামী ২২ জানুয়ারি সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৪৯টি আবেদনের শুনানি শুরু হবে সুপ্রিম কোর্টে।

যদিও আগের রায়ের উপর কোনও স্থগিতাদেশ এ দিন দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, এখনও বহাল আছে সব বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকারের রায়। যে বেঞ্চ এই রায়ের পুনর্বিবেচনা করবে, তাতে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা।

সেপ্টেম্বর মাসেই শবরীমালার মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকারে সম্মতি জানিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। 'ধর্মীয় ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে মহিলাদের যেতে না দেওয়া অস্পৃশ্যতার সামিল', আগের রায়ে এই মন্তব্য করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।

তবে সুপ্রিম কোর্টের রায় দিলেও, এখনও ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনও মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি। বেশ কয়েক জন মহিলা মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করলেও, পুরোহিত এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলির অবরোধ ভেঙে তাঁরা এখনও বিগ্রহ দর্শন করতে পারেননি। ত্রিভাঙ্কুর দেবসম ট্রাস্ট নামের যে সংস্থা মন্দির পরিচালনা করে, তারাও সুপ্রিম কোর্টের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছিল।

বিষয়টিতে জড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলিও। বিজেপি মন্দিরে মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়ার আবেগকে সর্বান্তকরণে সমর্থন দিয়েছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিলেও, তাদের খাস কেরলের সংগঠন কিন্তু প্রকাশ্যেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার।

বছরে ১২৭ দিন খোলা থাকে শবরীমালা মন্দির। আগামী ১৬ তারিখ থেকে ফের দেড় মাসের জন্য খুলছে এই মন্দির। এখনও পর্যন্ত ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের আটকাতে সফল হলেও, আগামী দেড় মাসে কী হবে, তা নিয়ে সন্দিহান ছিল মহিলাদের প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে যাওয়া বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্তে নিঃসন্দেহে কিছুটা স্বস্তি পেল সেই সংগঠনগুলি।
মন্দির কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, ৮০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরের দেবতা আয়াপ্পাস্বামী ব্রহ্মচারী। ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ঋতুমতী মহিলারা মন্দিরে ঢুকলে আয়াপ্পাস্বামীর ব্রহ্মচর্য্য নষ্ট হয়ে যাবে। সেই বিশ্বাস থেকেই মহিলাদের প্রবেশাধিকারে আপত্তি জানিয়ে আসছে মন্দির কর্তৃপক্ষ, পুরোহিত এবং হিন্দুত্ববাদীদের যৌথ মঞ্চ।