আন্দামানের নিষিদ্ধ দ্বীপে ঢুকে আদিবাসীদের হাতে প্রাণ হারালেন মার্কিন পর্যটক

আন্দামানের এ রকমই এক দ্বীপে খুন হয়েছেন ওই মার্কিন নাগরিক।

আন্দামানে খুন মার্কিন নাগরিক। অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীদের হাতে খুন হয়েছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি তাঁর দেহ।বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের আদিবাসীদের আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের তরফে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ সন্দেহভাজনকেও।এরা সকলেই পেশায় মত্স্যজীবী। ওই তরুণ পর্যটককে নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

নিহত ওই মার্কিন নাগরিকের নাম জন অ্যালেন চাও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, গির্জার যাজক ছিলেন তিনি। ঘন ঘন আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে যাতায়াত ছিল। সেন্টিনেল প্রজাতির মানুষের সঙ্গে যেচে আলাপ করতেন। চেষ্টা করতেন তাঁদের খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত করতে।

'আন্দামান শিখা'  সংবাদপত্রের দাবি, অতীতে মোট পাঁচবার আন্দামান ঘুরে গিয়েছিলেন জন। দেখা করতে চেয়েছিলেন আদিবাসী নেতাদের সঙ্গে। যাতে তাঁদের কাছেও খ্রিস্ট ধর্মের বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন। মৃত্যুর আগে গত পাঁচদিনে একাধিকবার নর্থ সেন্টিনেল আইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। তা-ও আবার স্থানীয় মত্স্যজীবীদের সাহায্যে। ওই মত্স্যজীবীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় পুলিশকে তারা জানিয়েছে, নর্থ সেন্টিনেল আইল্যান্ডে পৌঁছতেই অ্যালেনের উপর তির ধনুক নিয়ে হামলা করে আদিবাসী উপজাতিরা। বালির উপর দিয়ে টানতে টানতে সমুদ্র সৈকতের দিকে নিয়ে যায়। সেই শেষবার তাঁকে দেখেছিল তারা।

অ্যালেনের দেহের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। নামানো হয়েছে হেলিকপ্টারও। তবে নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে হেলিকপ্টার নামানোর সাহস পাচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। কারণ তাতে আদিবাসী উপজাতিরা রণমূর্তি ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা।

ভারত মহাসাগরের বুকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বাস সেন্টিনেলিজদের। ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী তাদের জনসংখ্যা ৫০-এর মধ্যে। তবে বহির্বিশ্ব থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন। ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের সরিয়ে রেখেছে তারা। নিজেদের এলাকায় বাইরে কারও প্রবেশ একেবারেই পছন্দ নয় তাদের। তা রুখতে নৃশংস পদক্ষেপ করতেও পিছপা হয় না। কোনও মুদ্রা ব্যবহার করে না সেন্টিনেলিজরা। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না সরকারও। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন বা তাদের এলাকায় প্রবেশক বেআইনি বলে গণ্য হয়। ভিডিয়ো ক্যামেরায় তাদের গতিবিধি রেকর্ড করাও নিষিদ্ধ। ২০১৭ সালে সরকারের তরফে সাফ জানানো হয়, সেন্টিনেলিজরা আদিম অধিবাসী।তাঁদের নিয়ে কোনওরকম ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা যাবে না।