কেউ অনাহারে মারা যাননি, নবান্নে দাঁড়িয়ে বলে দিলেন মমতা

তাঁর রাজ্যে অনাহারে মৃত্যু হয় না, দাবি মমতার।

লালগড়ের জঙ্গলখাস গ্রামে পর পর সাত জন শবরের মৃত্যু নিয়ে যখন হইচই চলছে, তখন অনাহারে তাঁদের মৃত্যুর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, "রাজ্যে অনাহারে কারও মৃত্যু হয় না। পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর জন্য সরকার বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করে।" অনাহারের প্রশ্ন খারিজ করে দিলেও, সরাসরি ওই গ্রামের কথা উল্লেখ মুখ্যমন্ত্রী করেননি।

এ মাসেই প্রথম ১১ দিনে ঝাড়গ্রাম জেলার এই গ্রামে ৪ জন শবরের মৃত্যু হয়েছে। আর গত অগস্টের ১০ তারিখ থেকে ধরলে মৃতের সংখ্যা ৭। কারওরই মৃত্যু বয়সজনিত কারণে হয়নি। এঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে যক্ষ্মা, যকৃতের সমস্যা ইত্যাদি কারণে। এই মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই আলোড়ন শুরু হয়।  নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার গ্রামে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ছুটে যান খোদ জেলা শাসক আয়েষা রানি। তিনিও ওই অনাহারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন,বলেন, "যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের বেশির ভাগেরই যক্ষ্মা হয়েছিল। যকৃতে সমস্যা ছিল। তাঁরা নিয়মিত চিকিত্সা করাতেন না। মদ্যপানও করতেন।"

তবে জেলা প্রশাসন বা রাজ্য সরকার যা-ই বলুক না কেন, বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। আর সেই বাস্তব উঠে এসেছে খোদ গ্রামেরই মানুষগুলোর মুখ থেকে। মোট ৩৫টি শবর পরিবারের বাস জঙ্গলখাস গ্রামে। গ্রামবাসীরা জানান, অর্ধেক দিন তাঁদের খাবারই জোটে না। সরকার ২ টাকা কেজি দরে চাল দেয় ঠিকই, কিন্তু তা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। কাজ বলতে জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে এনে বিক্রি করা, অন্যের জমিতে দিনমজুর খাটা। মাসের অর্ধেক দিন কাজ পেলেও বাকি সময় কাজ থাকে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়েও সরকারি বঞ্চনারও অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু তাঁদের সেই অভিযোগকে নস্যাত্ করে দিয়ে জেলা প্রশাসন।