ছত্তীসগঢ়ে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে আজ বিজেপির সুবিধা মায়া-যোগী জোটে?


ছত্তিসগড়ে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন আজ। প্রথম দফায় বিচ্ছিন্ন মাওবাদী হামলার পর দ্বিতীয় দফায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৯০টি আসনের মধ্যে ভোটগ্রহণ  ৭২টি আসনে। মাওবাদীদের সেরকম প্রভাব নেই, রাজ্যের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলের এরকম ১৯টি জেলায় আজ ভোটগ্রহণ। এবারই প্রথম ছত্তিসগড়ে ত্রিমুখী লড়াই। কংগ্রেস-বিজেপি-র লড়াইয়ে তৃতীয় মুখ অজিত যোগী। কংগ্রেস ছেড়ে জনতা কংগ্রেস তৈরি করেছেন তিনি। মায়াবতীর সঙ্গে অজিত জোট করায় বিজেপিরই সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা, রাজ্যের নেতানেত্রীরা আছেন বটে। তবে,লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই ভোটে লড়াইটা আসলে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর। ভোটও হচ্ছে একাধিক জাতীয় ইস্যুতে, যা কিনা গোটা ভারতেই এখন রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে। মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রল এবং ডিজেলের চড়া দাম। আচ্ছে দিন-কর্মসংস্থান।নোটবন্দি-জিএসটি। সরকারের আর্থিক সঙ্কট-টাকার দামে পতন। রাফাল নিয়ে বিতর্ক। সিবিআই-আরবিআইয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ। রাম মন্দির-হিন্দুত্ববাদ থেকে শুরু করে সাম্প্রদায়িকতা- গোরক্ষকদের তাণ্ডব। এসব ইস্যুতেই ভোটের ময়দানে মোদী-রাহুল।  

ছত্তিসগঢ়ে আদিবাসী ভোট ৬৫ শতাংশ। রাজ্যে আদিবাসী সমাজের সবচেয়ে বড় মুখ অজিত যোগী কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় কংগ্রেসের এই ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসবে। সঙ্গে রয়েছেন দলিত মুখ মায়াবতী। রাজ্যে বহুজন সমাজ পার্টির ভোট ৪ থেকে ৬ শতাংশ। গোটা রাজ্যে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশই আদিবাসী। ২৯টি আসন তাদের জন্য সংরক্ষিত। রাজ্যের ৩৫টি আসন এমন জায়গায় যেখানে ৪০ শতাংশের বেশি আদিবাসী ভোটার। গত বিধানসভা অর্থাত্‍ ২০১৩ সালে এই আসনগুলির মধ্যে ২২টি পায় কংগ্রেস এবং ১৩টি গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অজিত যোগী কংগ্রেসের হাত ছাড়ায় কংগ্রেসের দখলে থাকা এই ২২টি আসন যেতে পারে ছত্তিসগড় জনতা কংগ্রেসের ঝুলিতে। ২০০৮ সালে পিছড়বর্গের ভোট যায় বিজেপির ঝুলিতে। কিন্তু ২০১৩-য় তিনটি কারণে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা। অরণ্যের অধিকার, তপশিলী জাতি-উপজাতি আইন এবং কৃষক বঞ্চনা। 

মায়াবতী এবং অজিত যোগী জোট হওয়ায় তপশিলী জাতি-উপজাতির ভোট এবারও বিজেপির হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত অনেকের। ২০১৩ সালে বস্তার এলাকায় নোটায় ভোট পড়ে ২০ শতাংশ। সেই ভোট যদি এবার অজিতের ঝুলিয়ে যায়, তাহলে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন এই প্রাক্তন কংগ্রেসি। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। 

সব মিলিয়ে চিন্তার ভাঁজ কংগ্রেস এবং বিজেপির কপালে। কর্ণাটকে বিজেপির থেকে কম আসন পেয়েও কুমারস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের টোপ দিয়ে সরকার গঠন করে কংগ্রেস। ছত্তিসগঢ়ে যদি অজিত যোগীর নতুন দল ভাল ফল করে সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না কেউই। তখন সরকার গঠনের চাবিকাটি থাকবে অজিত যোগীর হাতে। সেক্ষেত্রে কর্ণাটক ফর্মুলার পথে হাঁটতে পারে রাহুল গান্ধীর দল। লোকসভা ভোটের আগে আরও একটা রাজ্যে অবিজেপি সরকার গঠন হলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে কংগ্রেসের, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।