ফের ‘বিশেষ’ অস্ত্রের পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ার, নজর আমেরিকার


পিয়ংইয়ং: নিরস্ত্রীকরণ কর্মসূচী চলছে৷ তারই মাঝে ফের স্বমহিমায় ফিরলেন উত্তর কোরিয়া প্রধান কিম জং উন৷ সেদেশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে একটি 'হাই টেক ট্যাকটিক্যাল' অস্ত্রের পরীক্ষা সফল হয়েছে৷ তবে ঠিক কী সেই অস্ত্র, তা খোলসা করে জানানো হয়নি উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে৷

কোরিয়া উপদ্বীপে এই সামরিক পরীক্ষা করা হয়েছে বলে সেদেশের ইয়ুনহ্যাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে৷ কোরিয়ান সেন্ট্রাল ব্রডকাস্টিং স্টেশনকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য দিয়েছে সংবাদ সংস্থা ইয়ুনহ্যাপ৷ তবে এই পরীক্ষার সঠিক স্থান কোনটি ছিল, তা জানানো হয়নি৷ নেতা কিমের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষাটি সম্পূর্ণ হয়েছে৷
 
দেশের সেনাকে শক্তিশালী করে তুলতেই এই পরীক্ষা বলে উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর৷ নর্থ কোরিয়ান স্টেট মিডিয়া জানাচ্ছে, এই আগ্নেয়াস্ত্রটি বহুদিন ধরেই পরীক্ষামূলক অবস্থায় ছিল৷ এদিন চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হয়, যা সফল হয়েছে৷

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে একদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তির হাত বাড়িয়েছে উত্তর কোরিয়া৷ অন্যদিকে এই অস্ত্র পরীক্ষা দুদেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে৷ উল্লেখ্য দিন কয়েক আগেই দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছিল দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজম থেকে অস্ত্র ও মাটিতে পোঁতা ল্যাণ্ডমাইন সরিয়ে নেওয়া হবে৷ সেই চুক্তিতে মাথায় রেখেই সীমান্ত থেকে নাকি ল্যান্ডমাইন সরানোর কাজ শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া৷

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জিওয়ং কেয়ং ডো৷ তিনি জানিয়ে ছিলেন সীমান্ত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার আধিকারিকদের সামনে রেখে মোট ৬৩৬টি মাইন তুলে ফেলেছে উত্তর কোরিয়া৷ সেপ্টেম্বর মাসেই এই মাইন নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু হয়েছে৷

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার এই শান্তি প্রক্রিয়াকে বিশ্বাস করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তারা জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়ার ভিতর ১৩টি গোপন ক্ষেপনাস্ত্র ঘাঁটি রয়েছে। আর তা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার মধ্যেই ওই ঘাঁটিগুলোর কয়েকটিতে রক্ষণাবেক্ষণ ও ছোটখাট উন্নয়ন কাজ লক্ষ্য করা গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) গবেষকরা। গবেষকদের এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয় নি৷

এর আগে, চলতি বছরেই সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হন কিম জং উন। দুপক্ষের এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু আদৌ চুক্তি কতটা মানা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। আর মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।