আমেরিকাকে বুড়ো আঙুল, ফের গোপন অস্ত্রের পরীক্ষা কিমের


আমেরিকার চোখরাঙানি তুড়ি মেরে উড়িয়ে ফের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া। সর্বাধিনায়ক তথা চেয়ারম্যান কিম জং উনের উপস্থিতিতে বুধবার এই সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পিয়ংইয়ং। এই অস্ত্রকে 'অত্যাধুনিক কৌশলগত গোপন অস্ত্র' বলছে উত্তর কোরিয়া।

শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার অ্যাকাডেমি অব ডিফেন্স সায়েন্সেসে সফল পরীক্ষার পর এই নামেই গোপন অস্ত্রটিকে ডাকছে উত্তর কোরিয়ায় সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ।পরীক্ষার সময় হাজির ছিলেন উত্তর কোরিয়ার তাবড় সেনাকর্তারা। যুদ্ধাস্ত্রটির ক্ষমতা দেখার পর নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি কিম জং উন। সামরিক অস্ত্রের দুনিয়ায় উত্তর কোরিয়াকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশের বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। যদিও এটি কী ধরনের অস্ত্র, এর মারণক্ষমতা কতটা। এর পাল্লা কতদূর, তা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছে না উত্তর কোরিয়া। আর তাই নিয়েই শুরু হয়েছে প্রবল সন্দেহ এবং সংশয়। এই অস্ত্র পরীক্ষার খারাপ প্রভাব পড়তে চলেছে বিশ্ব রাজনীতিতে। ফলে আমেরিকা আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে চলতি সম্পর্কের আরও অবনতি হতে পারে।

যদিও ঠিক কী গোপন অস্ত্রের পরীক্ষা, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। অনেকেই মনে করছেন, এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন বা অ্যান্টি মিসাইল রকেট হতে পারে যা রেডারে ধরা পড়ে না বা শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে চলে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে কৌশলগত অস্ত্র বলতে আসলে সেই যুদ্ধাস্ত্র কে বোঝানো হয়েছে, যা যে কোনও সময় হামলা চালাতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী-সহ দক্ষিণ কোরিয়ার মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলিতে। হামলা চালাতে পারে প্রশান্ত মহাসাগরে গুয়াম বা উত্তর মেরুর কাছে আলাস্কাতেও। গত নভেম্বরে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্রবহণে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা করার পরই টনক নড়েছিল সারা দুনিয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আওতায় চলে আসতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই কিম জং উনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে আলোচনায় বসেছিল আমেরিকা।

সম্প্রতি, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার কমাতে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। এর পরই স্বেচ্ছায় পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। গত কয়েক দিন ধরেই ফের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষার লাগাতার হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল কমিউনিস্ট কোরিয়া। তার পরই এই 'অত্যাধুনিক কৌশলগত যুদ্ধাস্ত্র'-র সফল পরীক্ষার খবরে নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগ বাড়ল আমেরিকা ও তার মিত্র দেশ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলি দাবি করেছে, এই মাসেই একাধিক রকেট উৎক্ষেপণে সক্ষম লঞ্চারের পরীক্ষাও করেছে উত্তর কোরিয়া। এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কারণ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি যে কোনও মুহূর্তে আঘাত হানতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে। দক্ষিণ আমেরিকার মার্কিন সামরিক ঘাঁটিও তাহলে চলে যাবে উত্তর কোরিয়ার রকেটের আওতায়। উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের একটি মডেলকেই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করেছে উত্তর কোরিয়া।