বিশ্ব রেকর্ড! ওয়ার্ল্ড বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ছ’বার সোনা জয় ম্যাগনিফিসেন্ট মেরির

সোনা জিতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মেরি কম।

আবারও তিনি ইতিহাস গড়লেন। ওয়ার্ল্ড বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ছ'বারের জন্য সোনা জিতলেন ম্যাগনিফিসেন্ট মেরি কম। আর সেই সঙ্গে ছুঁয়ে ফেললেন কিউবার কিংবদন্তি বক্সার ফেলিক্স স্যাভনকে।

তিনি যে দমে যাওয়ার পাত্র নন, সেটা আগেও প্রমাণ করেছিলেন মণিপুরের প্রান্তিক গ্রাম কাঙ্গাথেইয়ের এই মেয়েটি। রিংয়ের ভিতরে কী ভাবে জ্বলে উঠতে হয় শনিবার নয়াদিল্লিতে দেখিয়ে দিলেন মেরি। প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের হানা ওখোতাকে ৪৮ কেজি লাইটওয়েট বিভাগে ৫-০তে ধরাশায়ী করেন তিনি। সেই সঙ্গে একমাত্র মহিলা বক্সার হিসেবে ছ'বার সোনা জেতার নজির গড়লেন।

এর আগে এই টুর্নামেন্টে ২০০২, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, এবং ২০১০-এ সোনা জেতেন মেরি।

এ দিনের ম্যাচ জয়ের পর নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারেননি কাঙ্গাথেইয়ের মেয়েটি। চোখ ভিজে গিয়েছিল কান্নায়। তাঁর প্রতি অজস্র ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেরি বলেন, "সেই সব ফ্যানদের ধন্যবাদ দিতে চাই যাঁরা এ দিন স্টেডিয়ামে এসে আমার জন্য গলা ফাটিয়েছেন, ভারতের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন।"

তিন মাস আগে পোলান্ডের এক প্রতিযোগিতায় এই হানার সঙ্গেই লড়েছিলেন মেরি। সে বারই প্রথম রিংয়ে দু'জন মুখোমুখি হন। পোলান্ডে কিন্তু হানা কার্যত দাঁড়াতেই পারেননি। আবারও মুখোমুখি হলেন। এ বার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। সে দিনের হারের কথা ভুলতে পারেননি হানা। তাই প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ছিলেন। দু'জন ফাইনালে মুখোমুখি হতেই জল্পনা চলতে থাকে, এ বার কি তবে পারবেন হানা পোল্যান্ডের সেই ম্যাচের প্রতিশোধ নিতে?

শুরু থেকেই ম্যাচটা বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছিল। মেরিও নিজেকে ভাল ভাবে প্রস্তুত করে নিয়ে এসেছিলেন। তবে তাঁর একটা বাড়তি অ্যাডভানটেজ ছিল, এই হানাকেই আগে হারিয়ে এসেছেন। তাই মনোবলও ছিল বেশ চাঙ্গা। কিন্তু প্রতিপক্ষকে কখনও দুর্বল ভাবতে নেই, এটা খেয়াল রেখেছিলেন মেরি। তাই যতই হানার থেকে এগিয়ে থাকুন না কেন, তাঁকে সমীহ করে চলেছেন প্রতি মুহূর্তে। আর সেটাই তাঁকে ইতিহাস গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে।

ম্যাচ জয়ের পর স্টেডিয়ামে থাকা দর্শকদের উদ্দেশে মেরি বলেন, "আপনাদের দেওয়ার মতো আমার কিছু ছিল না। আমি শুধু চেয়েছিলাম দেশকে সোনা উপহার দিতে।" মেরি যেমনটা চেয়েছিলেন, তেমনটাই হয়েছে। পেরেছেন তিনি দেশকে সোনা উপহার দিতে। মেরি আরও বলেন, "দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ৪৮ কেজি বিভাগে খেলতে পারিনি। অবশেষে সেই সুযোগ এল।"