মদ্যপান বা বার্ধক্যজনিত কারণেই শবরদের মৃত্যু, বিধানসভায় দাবি মমতা


অনাহারে নয়, বরং শবরদের মৃত্যুর পিছনে রয়েছে আদিবাসী জীবনযাপনের ধরনধারণ। পর্যবেক্ষণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শবর-মৃত্যু নিয়ে বিধায়সভায় মু্খ্যমন্ত্রীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিধানসভায় চিৎকার-চেঁচামেচি ছাড়াও ওয়াকআউট করলেন বাম এবং কংগ্রেস বিধায়করা।

লালগড়ের পূর্ণপানি এলাকার জঙ্গলখাস গ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে সাত জন শবরের মৃত্যু হয়েছে। এ খবর প্রকাশ্যে আসতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, অনাহার এবং অপুষ্টিজনিত কারণে অসুস্থ হয়েই মারা গিয়েছেন তাঁরা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় সে অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর মতে, কেউ অনাহারে মারা যাননি। গত বুধবার এ প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, রাজ্য সরকার প্রান্তিক মানুষদের জন্য যথেষ্ট সক্রিয়।

মঙ্গলবার বিধানসভায় সেই একই সুর শোনা গেল মমতার গলায়। এ দিন বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে তা নিয়ে বলতে উঠে শবরদের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। তিনি জানান, জঙ্গলমহলে দু'টাকা কেজি দরে চাল-ডাল দেওয়া হচ্ছে। এর পরেই শবরদের মৃত্যু প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। এ নিয়ে বিরোধী আক্রমণকে ভোঁতা করতেই তিনি বলেন, "কেউ কেউ বলছেন, শবরেরা নাকি খাবার পাননি। কিন্তু ওদের প্রত্যেকের রেশন কার্ড ছিল।" তাঁর দাবি, "সাত জন শবরের মধ্যে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে দু'জনের। মদ্যপান করে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।" মমতার মতে, ঘটনার জন্য দায়ী আদিবাসীদের জীবনযাপনের ধরন। মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, শবরদের এলাকায় এক জনও নেই যাঁরা খেতে পান না। সংবাদমাধ্যমের একটা অংশই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই ঘটনার উল্লেখ করছে বলে দাবি তাঁর।

মমতার এই মন্তব্যের প্রতিবাদে বিরোধীরা সভায় তুমুল হই-হট্টগোল শুরু করেন। এর পর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান-সহ বাম-কংগ্রেস নেতারা ওয়াকআউট করেন। বিধানসভার বাইরে স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সভা বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন বিরোধীরা।