শিশুনির্যাতনের প্রতিবাদে পথে নামল ৫২৫ শিশু


হাওড়া: মুম্বইয়ে পরিচারিকার হাতে ছোট্ট শিশুর মার খাওয়ার কথা মনে পড়ে? অথবা দক্ষিণ ২৪ পরগনার আব্দুল করিমপুরের সেই ঘটনা। যেখানে অঙ্ক না পারায় প্রথম শ্রেণীর শিশুকে বেধড়ক মারধর করে গৃহশিক্ষক। ওডিশার চার বছরের শিশুটি খেতে চেয়েছিল। 'শাস্তি'স্বরূপ কপালে জুটেছিল গরম লোহার রডের মার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন হাজারও শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। ঠিক এরই প্রতিবাদে পথে নামল ৫২৫ জন শিশু। নেপথ্যে শিশু চিকিৎসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী।

ওরা কোমল, ওরা বোঝেনা ভুল ঠিকের পার্থক্য। যেমন গড়বে তেমন তৈরি হবে ওরা। ঠিক মাটির পাত্রের মতো। তবুও শিশুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা কমছে না। শিশু দিবসের আগে এর বিরুদ্ধেই বিশাল এক শোভাযাত্রার আয়োজন করলেন ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী এবং 'হাওড়া চাইল্ড রিলিফ ফাউন্ডেশন'। সকাল ১০টায় হাওড়া বিজয়ানন্দ পার্ক থেকে ইছাপুর নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার হাঁটল শিশুরা। উপস্থিত থাকলেন তাদের অভিভাবকরা।

তিন থেকে ১২ বছরের ৫২৫ জন শিশু হাতে রইল শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে লেখা নানাধরনের পোস্টার। কোথাও লেখা 'মা তুমি মারো কেন? বুদ্ধি করে শাসন কর'। আবার কোনও পোস্টারে লেখা , 'বাবা তুমি বড্ড ভালো, আমার আমায় একটু সময় দাও'। আড়াই বছরের ছোট্ট শ্রেয়নের হাতেও একটি প্ল্যাকার্ড ছিল। তাতে শুধুই একটি হাতের ছবি দেওয়া। প্ল্যকার্ডের প্রতীকী ছবির প্রতিবাদী ভাষা স্পষ্ট। শ্রেয়ন আধো আধো কথা বলছে। দুধের শিশু। ওর মা মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "এই শোভাযাত্রার কথা গত বছরেই শুনেছিলাম। এই বছর ছেলেকে নিয়ে এলাম। অনেক বাচ্চাদের সঙ্গে থাকা মানে একটা সমাজের সঙ্গে পরিচয় হওয়া। পাশাপাশি এই প্ল্যাকার্ডের লেখা গুলো আমাদের অভিভাভকদের জন্যও শিক্ষা দিচ্ছে।"

ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, "এই বছর নয় বছরে পড়ল আমাদের এই শোভাযাত্রা। আমাদের মূল উদ্দেশ্যটা শিশু দিবসকে সামনে রেখে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলা। সেই চেষ্টাই বরাবর করে আসছি। আশা করি এই যাত্রা আভিভাবকদের মনে কিছু প্রভাব ফেলবে। তাঁরাও সন্তানদের যখন শাসন করবেন আমাদের বার্তাগুলো আশা করি তাদের মনে পড়বে।" একইসঙ্গে তিনি বলেন, "শিশুদের গড়ে নিতে হয়। যেমন ভাবে গড়বে একটা শিশু তেমন ভাবেই তৈরি হবে।"

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, "আজকের শিশুরা আগামীর ভবিষ্যৎ। ওঁদের আজকের দিনটা ভালোভাবে গড়তে পারলে আমাদের দেশেরই লাভ। কাজেই সেই দায়িত্বটাই আমাদের পালন করতে হবে।"