দাড়িভিটের প্রধান শিক্ষক ও সহ প্রধান শিক্ষক সাসপেন্ড


কলকাতা: কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে শিক্ষা দফতর সাসপেন্ড করল উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু ও সহ প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদাকে৷ ভেঙে দেওয়া হয়েছে স্কুল পরিচালন সমিতি৷ সুষ্ঠুভাবে স্কুল চালাতে নিয়োগ করা হয়েছে প্রশাসক৷ শুক্রবার জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷

গত ২০শে অগাষ্ট শিক্ষকের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনে গুলি চলে৷ নিহত হন তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকার নামে দুই ছাত্র৷ তারপর থেকেই অশান্ত ইসলামপুরের দাড়িভিট৷ বন্ধ দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়৷ গুলি চালানোর ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে স্কুলের সামনে ধর্নায় বসছেন নিহত দুই ছাত্রে পরিবার৷ ফলে স্কুলে গিয়েও ফিরে যেতে হচ্ছে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের৷ ঘটনার দিন ও তার পরে স্কুল চালু করতে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা কী?

কারণ জানতে বৃহস্পতিবার কলকাতায় শিক্ষা দফতরে ডেকে পাঠানো হয় দাড়িভিট স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু ও সহ প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদাকে৷ তাদের উত্তর সন্তোষজনক নয়৷ এরপরই শুক্রবার, কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে অভিজিৎ কুণ্ডু ও নুরুল হুদাকে সাসপেন্ড করে শিক্ষা দফতর৷ নিজেদের পদক্ষেপের স্বপক্ষে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে ফের তাদের ওই পদে বহাল করা হবে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷

দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির মেয়াদ নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে৷ তারপরেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন কমিটির সদস্যরা৷ মাঝে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা৷ দুই শিক্ষককে সাসপেন্ডের পাশাপাশি এদিন শিক্ষা দফতরের তরফে দাড়িভিট স্কুলের পরিচালন কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ সুষ্ঠুভাবে কাজ চালাতে নিয়োগ করা হচ্ছে প্রশাসক৷

অঙ্ক ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের বদলে দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ করা হয় কলা বিভাগের শিক্ষক৷ বার বার বলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি৷ প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্ররা৷ ২০শে অগাষ্টের সেই আন্দোলনেই আচমকা গুলি চলে পুলিশের উপস্থিতিতে৷ নিহত হয় দুই ছাত্র৷ পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ ছিল গ্রামবাসীদের৷

ইউরোপ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন পুলিশের বন্দুক থেকে গুলি চলেনি৷ ঘটনায় আরএসএস ও বিজেপির বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ করেন তিনি৷ সাসপেন্ড করা হয় জেলা স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলকে৷ গুলি চালানোর তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে৷ যদিও রাজ্য তদন্তকারী সংস্থায় ভরসা রাখতে পাচ্ছেন না নিহতের পরিবার৷ তাদের দাবি ঘটনার সিবিআই তদন্ত করতে হবে৷ নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে নিরাপরাধ ১৪ জন গ্রামবাসীকে৷

দাবিপূরণ না হওয়ায় নিহতদের পরিবার স্কুলের সামনে ধর্নায় বসেন৷ বন্ধ স্কুল৷ ফের অশান্তির আশঙ্কায় থমথমে দাড়িভিট৷ বিরোধীদের নিশানায় রাজ্য সরকার৷ বিতর্কে জল ঢালতে প্রয়োজন স্কুলে পঠন পাঠন৷ তাই এদিন ফের স্কুল চালুর জন্য দাড়িভিটের মানুষের কাছে আবেদন করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ জানিয়ে দেন স্কুল খোলাই এখন রাজ্যের কাছে অন্যতম আগ্রাধিকার৷