নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে ক্যারাটে প্রশিক্ষকের ঘুসিতে মৃত্যু বৃদ্ধার


দুই পড়শি কিশোরের মধ্যে ঝগড়া। হাতাহাতি। ফয়সালা করতে গিয়ে এক কিশোরের ঠাকুরমার বুকে প্রবল আঘাত করে বসলেন অন্য কিশোরের বাবা। ক্যারাটে প্রশিক্ষক সেই ব্যক্তির ঘায়েই মৃত্যু হল ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার। রবিবার রাতে একবালপুরের ডোমপট্টির ঘটনা। মৃতের নাম মীনা দেবী শর্মা। ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে দীপক রাজবংশী নামে ওই ক্যারাটে প্রশিক্ষক। ধরা পড়েছে আরও দু'জন।

ক্যারাটে প্রশিক্ষক দীপক ব্ল্যাক বেল্ট উপাধিধারী। দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় যুক্ত। দুই কিশোরের মধ্যে গন্ডগোল মেটাতে গিয়ে দীপক এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করে ফেলবে তা ভাবতেও পারেননি প্রতিবেশীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, শরীরের দুর্বল জায়গাগুলো কোথায় পেশার সুবাদে দীপক তা জানত। কাকে কীভাবে ধরাশায়ী করতে হয় সব তারা জানা ছিল। তাই দীপকেরই বেশি সাবধানী হওয়া উচিত ছিল। তা না করে উলটে দীপক তার বিদ্যা অন্যায়ভাবে এক বৃদ্ধার উপর প্রয়োগ করেছে। এটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরা।

ক্যারাটের বিদ্যা অনুযায়ী কান, মাথা, গলার পাশাপাশি বুকের নিচের অংশ মানব শরীরের দুর্বলতম জায়গা। বুকের মাঝ বরাবর নিচের দিকে একেবারে শেষ অংশকে বলে সোলার প্লেক্সাস। ছোট কাঠের টুকরোর মতো দেখতে হয় সেটি। দু'দিকের পাঁজরের সংযোগস্থলের একেবারে নিচে বুকের হাড়ের শেষের এই অংশটি ছোট লেজের মতো ঝুলতে থাকে। সামনে-পিছনে কোনও বাধা থাকে না। ওই অংশে থাকে গুচ্ছ স্নায়ুও। স্বাভাবিকভাবেই অংশটি স্পর্শকাতর। ব্ল্যাক বেল্ট ক্যারাটে প্রশিক্ষকদের কাছে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী শুধু না, মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য শত্রুর শরীরের এই অংশটি অন্যতম অস্ত্র।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, গন্ডগোল লেগেছিল দুই কিশোরের মধ্যে। তা ঠান্ডা মাথাতেই মিটিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু তা না করে নিজের ছেলের হয়ে পড়শির ছেলেকেই মারতে উদ্যত হয়ে ওঠে দীপক। ওই সময় পড়শি ওই ছেলেটিকে আড়াল করতে ছুটে আসেন তার ঠাকুরমা। সেই অবস্থায় বৃদ্ধার বুকেই মোক্ষম ঘুসি চালিয়ে দেয় দীপক। ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর।