পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ব্যাংক আধিকারিক


ঢাকা: পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ঢাকার একটি ব্যাংকের এক শীর্ষ আধিকারিক৷ ধৃতের নাম হাফিজুর রহমান, বয়স ৩৬৷ 'জনতা ব্যাংক'-এর শীর্ষ পদে আসীন রয়েছেন তিনি৷ অভিযোগ, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে গত তিন বছরের মধ্যে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি৷ ধৃতের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি৷

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ধৃত ব্যক্তি৷ এই একই অভিযোগে আগে প্রায় ৪০ জনকে গ্রেপ্তারের করা হয়৷ তাদের জেরা করেই হাফিজুরের নাম উঠে আসে৷ গত ২৮ অক্টোবর হাফিজুরকে গ্রেপ্তার করেন সিআইডি আধিকারিকরা। তিনদিন রিমান্ডে থাকার পর গতকাল শুক্রবার ধৃত ঢাকার মহানগর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করেছে হাফিজুর৷

কেমন ভাবে কাজ করত এই চক্রটি? পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে এদের হাতে চলে আসত প্রশ্নপত্র৷ বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক বা সহকারীদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পেত এরা৷ তারপর দ্রুত তা সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর কাছে সরবরাহ করে দিত। ডিজিটাল ডিভাইসটি কেমন? এটি দেখতে ক্রেডিট কার্ড আকৃতির খুদে মুঠোফোনের মতো৷ ব্লু-টুথের মাধ্যমে এটা যুক্ত থাকে হেডফোনের সঙ্গে। এর সাহায্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে বসেই উত্তরপত্রের সমাধান পেয়ে যেত পরীক্ষার্থীরা।

এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে চলতি বছরের ৮ আগস্ট গ্রেপ্তার হন অলিপ কুমার বিশ্বাস, মহম্মদ ইব্রাহিম, আইয়ব আলি ওরফে বাঁধন, মোস্তাফা কামাল-সহ নয়জন। পুলিশ জানিয়েছে, হাফিজুরের অধীনেই কাজ করত এরা৷ জবানবন্দিতে হাফিজুর বলেন, বিমানবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ২০১৪-তে তিনি জনতা ব্যাংকে যোগ দেন। ওই বছরের শেষ দিকে মোস্তাফা কামালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৫ -তে মোস্তাফাকে সঙ্গে নিয়েই প্রথম জালিয়াতি করে হাফিজুর। তারপর থেকে একের পর এক জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন হাফিজুর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা৷