পরকীয়ায় মজে যুবক-যুবতী, বিয়ে দিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরাই


ঘাটাল: পরকীয়া কোনও ফৌজদারি অপরাধ নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এটি কোনও শাস্তিযোগ্য অপরাধও নয় বলে রায়ে জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র তাঁর রায়ে জানান, এই আইন স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। কিন্তু সেই পরকীয়ার জেরে দুই পরিবারের ঘর ভাঙতে বসেছে দাসপুরের দানিকোলা গ্রামে। দুই বিবাহিত নারী-পুরুষের পরকীয়া প্রকাশ্যে আসতেই মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। আর নতুন বিবাহিতা প্রেমিকাকে নিয়ে খুশি মনে বাড়িও ফিরে গেলেন বিবাহিত প্রেমিক।

ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, দাসপুরের হরিরাজপুর গ্রামের তাপস মণ্ডল বিবাহিত। দু'টি সন্তানও রয়েছে তাঁর। তাপসবাবুর শ্বশুরবাড়ি পাশের দানিকোলা গ্রামে। শ্বশুরবাড়ির সূত্রে প্রায়ই দানিকোলা গ্রামে যাতায়াত ছিল তাপসবাবু। সেই গ্রামেই আলাপ কৃষ্ণা হাইত নামে এক গৃহবধূর। তিনিও দুই সন্তানের মা। স্বামী চাষের কাজ করেন। আলাপ থেকে প্রেম। প্রেম থেকে পরকীয়া। পরে আরও ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ক গড়ে উঠে তাঁদের। তাঁদের এই পরকীয়া চোখ এড়ায়নি গ্রামবাসীদের। তক্কে তক্কে ছিলেন তাঁরা। পুজো উপলক্ষে তাপসবাবু বুধবার গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ি। লুকিয়ে দেখা করেছিলেন কৃষ্ণাদেবীর সঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাতে চোখে পড়ে যায় গ্রামবাসীদের। তাঁদের দু'জনকে গ্রামের শীতলা-মনসা মন্দিরে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা।

আগে থেকেই বিয়ের আয়োজন করে রাখা হয়েছিল। পরে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। যথারীতি তাপসবাবু কৃষ্ণাদেবীর মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেন। মালা বদলও হয়। বাজে শঙ্খ, মিষ্টিমুখও করানো হয়। তারপর হাসি মুখে নতুন বউকে নিয়ে হরিরাজপুরে নিজের বাড়িতে নিয়ে চলে যান তাপসবাবু। নববধূকে পেয়ে কী বললেন তাপসবাবু? একগাল হাসি ফুটিয়ে তিনি বললেন, "যা মনে মনে চেয়েছিলাম। তাই পেলাম।" বাড়িতে কোনও সমস্যা হবে না।" একইভাবে নিজের মনের গোপন প্রেমের কথা জানিয়ে কৃষ্ণদেবী বলেন, "আমিও চেয়েছিলাম। এবার থেকে নতুন বরের বাড়িতে থাকব।" আর এই পরকীয়ার বিয়ের পরিণতির ঘটনা পৌঁছে গিয়েছে বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার কাছে। তিনি বলেন, "ঘটনা শুনেছি। ওই গ্রামের শীতলা-মনসা মন্দিরে বিয়েও করেছেন তারা। ওঁরা যা চাইছিলেন, তাই হয়েছে। তবে দুই পরিবারে কী ঘটতে চলছে তা বলতে পারব না।"