রাতে স্বামী-স্ত্রী ঘনিষ্ঠ হলেই জানলায় ভেসে ওঠে ছায়ামূর্তি, এরপর একদিন যা ঘটে গেল...


প্রতি রাতে স্বামী-স্ত্রী যেই ঘনিষ্ঠ হতে যাবেন, জানলায় ভেসে উঠল আবছা মুখ, কখনও একটা ছায়া সরে যেত। ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে থাকতেন স্বামী-স্ত্রী। কী সেই ছায়া বুঝে ওঠার আগেই, হাওয়া হয়ে যেত সব। একদিন তো সেই ছায়া আবার হাত বাড়িয়ে তাঁদের ছুঁতেও আসে। এর পরই তারা বুঝতে পারেন, কোনও অশরীরি আত্মা নয়, ওই ছায়া আসলে শরীরি।

আর সেই ছায়াকে শাস্তি দিতে গিয়েই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। দম্পতি পরিকল্পনা করে, এবার তাঁরা জানলায় জড়িয়ে রাখবেন বিদ্যুতের তার। কেউ উঁকি দিলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবেন। একবার শক লাগলে আর ভুলেও উঁকি দেবেন না। যেমন ভাবনা, তেমনই কাজ। কিন্তু তা যে ডেকে আনবে ভয়ানক বিপদ, বুঝতে পারেননি তাঁরা।

রাতে স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গতা দেখার জন্য প্রতিবেশী যুবক উঁকি দিয়েছিলেন জানলায়। আর জানলায় হাত দেওয়াও যা, অমনি শক খেয়ে ছিটকে পড়েছিলেন ভোলা বৈরাগ্য নামে যুবক। আর্ত চিৎকার শুনে দম্পতি বুঝতে পেরে যান, বিপদ ঘটে গিয়েছে। যুবক আর উঠতে পারেননি। নিথর হয়ে গিয়েছিল শরীর। তখন প্রমাণ লোপাট করতে চটজলদি দেহ ফেলে আসা হয়েছিল রাজ্য সড়কের ধারে।

পরের দিন যথারীতি দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হয় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন যুবক। সন্দেহ দানা বাঁধে তাতেই। শুরু হয় তদন্ত। আড়াইমাস আগে ঘটে যাওয়া এই কাণ্ডে গ্রেফতার হন নবদম্পতি-সহ তিনজন। বর্ধমানের কালনায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

গত ২৯ আগস্ট ভোলা বৈরাগ্যের দেহ উদ্ধার হয় কালনার বুলবুলিতলায় এসটিকেকে রোডের ধারে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবক কী করে গেল রোডের ধারে, তা নিয়েই তদন্ত এগোতে থাকে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই প্রকাশ্যে আসে পুরো কাহিনি। পুলিশ জানতে পারে রাজু সর্দারের নতুন বিয়ে হয়েছে। রাতে তার জানলা দিয়ে কেউ উঁকিঝুঁকি মারতেন। তা আটকাতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছিলেন তিনি। মৃত্যুর পর রাজু ও তার সঙ্গীরা দেহ তুলে নিয়ে যায়।