শেখার বয়স নেই, তারই প্রমান রাখলেন ৯৬ বছরের ‘তরুণী’


শেখার কোনও বয়স নেই। ইচ্ছে থাকলেই উপায় আপনে আপ এসে হাজির হবে আপনার কাছে। এমনই আরেকবার প্রমাণ করলেন কেরালার বছর ৯৬ এর এক বৃদ্ধা। নাকি তরুণী? এই বয়সে স্বাক্ষরতা পরীক্ষায় ১০০ তে ৯৮ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন তিনি। এখন ইচ্ছে কম্পিউটার শেখার। এবং সেই ইচ্ছেকে মান্যতা দিলেন কেরালার শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক সি. রবীন্দ্রনাথ।

২০১৬ সালের পুনঃনির্বাচনের পর কেরালা সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল যে প্রত্যেক রাজ্যবাসীকে স্বাক্ষর করার, এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব নেবে বর্তমান রাজ্য সরকার। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী সি. রবীন্দ্রনাথ একটি ল্যাপটপ উপহার দিয়েছেন ৯৬ বছর বয়সী কাত্যায়নী আম্মাকে, যিনি অক্ষরলক্ষম মিশনের অংশ হিসাবে রাষ্ট্রের স্বাক্ষরতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। একইসঙ্গে এই কৃতিত্ব অর্জনকারী ভারতের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি।
গত মাসে স্বাক্ষরতা পরীক্ষায় ৯৮ নম্বর অর্জন করে কাত্যায়নী আম্মা কম্পিউটার চালানোর পদ্ধতি শিখতে চেয়েছেন, সঙ্গে দশম শ্রেনীর পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছেন। এদিন রবীন্দ্রনাথ আলাপুঝা জেলার চেপাদে তাঁর বাড়িতে যান এবং তাঁকে ল্যাপটপ উপহার দেন। ল্যাপটপ পাওয়ার পর নিজের নাম ইংরেজিতে টাইপ করে লিখে দেখিয়েছেন আম্মা।

 সি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিলেন জনশিক্ষা পরিচালক কেভি মোহন কুমার
ঘনিষ্ঠ সূত্র মারফত রবীন্দ্রনাথ জানতে পারেন, কাত্যায়নী আম্মা কম্পিউটার শিখতে চান। তারপরই তাঁর বাড়িতে যাওয়ার আগে মাঝপথ থেকে একটি ২৫,০০০ টাকার ডেল ল্যাপটপ কিনে নিয়ে যান তিনি। এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জনশিক্ষা পরিচালক কেভি মোহন কুমার।

এর আগে কোনওদিন স্কুল যাননি কাত্যায়নী আম্মা, এবং বিয়ের পর সংসারের বেড়াজালেই নিজেকে বেঁধে রেখেছিলেন। মনে মনে পড়াশোনা করার ইচ্ছে ছিল বরাবরই। সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বর্তমানে সন্তান, নাতি নাতনি, এবং তাঁদের সন্তান নিয়ে সংসার তাঁর। এই বছরের শুরুতে স্বাক্ষরতা পরীক্ষার জন্য নিজেকে নথিভুক্ত করেছিলেন কাত্যায়নী, এবং শিক্ষকের সাহায্যে আগস্ট মাসে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন যে তিনি ৯৮ নম্বর পেয়ে খুশি তো বটেই, তবে আর দুটো নম্বরের জন্য আফসোস রয়ে গেল।