লকারে চেক, সেই চেকেই চিকিৎসকের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ২০ লাখ


চেকবই তাঁর কাছে। চেকের পাতাও তাঁর আলমারির লকারে। তারপরেও সেই চেকের মাধ্যমে গায়েব হয়ে গেল ২০ লাখ টাকা!

ঘটনাটি ঘটেছে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোমেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন প্রধান প্রশান্ত কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এ বিষয়ে নেতাজী নগর থানাতে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু, এখনও পুলিশ সেই জালিয়াতের কোনও হদিশ করতে পারেনি।

ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রিজেন্ট পার্ক শাখাতে প্রশান্তবাবুর অ্যাকাউন্ট প্রায় চার দশকের পুরনো। তিনি এ দিন বলেন,"গত ২০ নভেম্বর দুপুরে মোবাইলে মেসেজ এল। দেখি আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ লাখ টাকা ডেবিট হয়ে গিয়েছে।" মেসেজ পেয়েই তিনি ব্যাঙ্কে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। প্রশান্তবাবু বলেন, "বার বার ফোন করেও ব্যাঙ্কের কাউকে ধরতে পারিনি।"

পরে তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর সই করা চেকেই ওই টাকা চলে গিয়েছে অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে। প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন,"আমি তাঁদের কাছে চেকের নম্বর জানতে চাই। ব্যাঙ্ক যে চেকের নম্বর দেয় সেই নম্বরের চেক আমার বাড়িতে।" তিনি আরও বলেন, "সেই নির্দিষ্ট চেকবই, চেকের পাতা সব আমি ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখাই। তখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেন বড়সড় জালিয়াতি হয়েছে।" ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেন, চেকটি জাল করা হয়েছে, সেই সঙ্গে জাল করা হয়েছে ওই চিকিৎসকের সইও।

তদন্তকারী আধিকারিকরা প্রাথমিক তদন্তের পর ব্যাঙ্ককেই গোটা জালিয়াতির জন্য দায়ী করেছেন। এক তদন্তকারী বলেন,"নিয়ম অনুযায়ী এক লাখ টাকার বেশি অঙ্কের চেক হলেই নিয়ম সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এ ক্ষেত্রে তা আদৌ করা হয়নি।" সেটা কেন করা হয়নি তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। চেক ক্লিয়ারেন্সের গোটা প্রক্রিয়াটা হয়েছে যে সময় সেটি সাধারণ ভাবে ব্যাঙ্ক কর্মীদের বিশ্রামের সময়। তদন্তাকারীরা গোটা জালিয়াতিতে ব্যাঙ্ক কর্মীদের একাংশের যোগাযোগের সম্ভবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের মুখপত্রের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, তাঁরাও অভ্যন্তরীন তদন্ত শুরু করেছেন।