ফের কন্দহরগামী বিমান ছিনতাই! ভুল সুইচ দেওয়ায় দিল্লি বিমানবন্দরে হুলস্থুল, নামল এনএসজি

এয়ারলাইন্সের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে

প্রায় দু'দশক আগের কান্দাহার বিমান ছিনতাই আতঙ্কের স্মৃতি ফিরল দিল্লি বিমানবন্দরে। আচমকাই বেজে ওঠে বিমান ছিনতাইয়ের অ্যালার্ম। সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তাবাহিনী এবং ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড  (এনএসজি) কমান্ডোরা বিমানটিকে ঘিরে ফেলেন। প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়পত্র দিলে উড়ে যায় বিমানটি।

কন্দহরগামী দিল্লি-কন্দহর এফজি ৩১২ বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার কথা ছিল ঠিক সাড়ে তিনটেয়। আরিয়ানা-আফগান এয়ারলাইন্সের বিমানে উঠেছিলেন ১২৪ জন যাত্রী এবংমাত্র কয়েকদিন বয়সের এক শিশু। পাইলট-সহ নয় বিমানকর্মী বিমানে ওঠার পর টেক অফের জন্য ট্যাক্সি বে থেকে রানওয়ের দিকে এগোচ্ছিল বিমানটি। সেই সময়ই আচমকা বেজে ওঠে 'হাইজ্যাক অ্যালার্ম'।

ওই অ্যালার্ম বাজলেই সতর্কবার্তা পৌঁছয় বিমানবন্দর, এনএসজি-সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায়। সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তাকর্মীরা ওই বিমানের চার দিকে ঘিরে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যায় এনএসজি কমান্ডোর একটি বাহিনীও। দীর্ঘক্ষণ বিমানটিকে ঘিরে রাখেন তাঁরা। এরপর পাইলটকে বিমানটিকে 'আইসোলেশন বে'-তে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যাত্রীদের মধ্যেও তখন চরম আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা উদ্বেগ।

আইসোলেশন বে-তেই বিমানের সর্বত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এনএসজি কমান্ডোর দল এবং নিরাপত্তাকর্মীরা প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে তল্লাশি করে এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর সন্দেহজনক কিছু না মেলায় ওড়ার সবুজ সঙ্কেত দেন। এর পর ফের শুল্ক ও অভিবাসন দফতরের কর্তারা দ্বিতীয়বার যাত্রীদের নথিপত্র খতিয়ে দেখেন। সব শেষে দেওয়া হয় ছাড়পত্র। তার পরই কান্দাহারের উদ্দেশে উড়ে যায় বিমানটি।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংস্থা ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশনের কর্তারা প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছেন, ভুল করে পাইলট বা কেবিন ক্রু কেউ 'হাইজ্যাক বাটন' অন করে দিয়েছিলেন। তার জেরেই এই বিপত্তি।

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি ৮১৪ বিমান অপহরণ করে কন্দহর নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। তিরুঅনন্তপুরম থেকে নেপালের কাঠমান্ডু হয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে নামার কথা ছিল। পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে হরকত উল মুজাহিদিন জঙ্গি গোষ্ঠী ওই অপহরণের নেপথ্যে ছিল বলে পরে তদন্তে উঠে আসে। অমৃতসর, পাকিস্তানের লাহৌর, দুবাই হয়ে শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের কন্দহরে নিয়ে যাওয়া হয় ওই বিমানটি। এদিনের ঘটনা সেই স্মৃতিই উস্কে দিয়েছে অনেকের মনে।

দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।