প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে ঝাঁপ ফেলল কলকাতার ভ্রমণ সংস্থা!

স্কাইলার্ক ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল নামে একটি ভ্রমণ সংস্থার প্রায় কোটি টাকার প্রতারণার কথা সামনে এসেছে। 


ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ বিশাখাপত্তনমে বেড়াতে যাওয়ার কথা অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার মধূসুদন শিকদারের। ওয়েবসাইট ঘেঁটে হদিশ পেয়েছিলেন স্কাইলার্ক ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল নামে একটি ভ্রমণ সংস্থার। ঝকঝকে ওয়েব পেজ। সেখানে যাদবপুরের অফিসের ঠিকানা দেওয়া। ওই সংস্থার অফিসেও গিয়েছিলেন মধুসূদনবাবু। চকচকে অফিস। সন্দেহ করার কোনও কারণ ছিল না।

তাই অগস্ট মাসের ২৪ তারিখ পরিবারের ১০ জনের ভ্রমণ বাবদ ৭২ হাজার টাকার চেক দিয়ে আসেন সংস্থার মালিক রূপায়ণ গুপ্তের হাতে। মধুসূদনবাবু মঙ্গলবার বলেন,"কথা হয়েছিল পুজোর আগেই ট্রেনের টিকিট এবং হোটেলের বুকিংয়ের কাগজপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু পুজোর আগে থেকেই বেপাত্তা রূপায়ণ। ফোনে পাওয়া যায় না। শেষ পর্যন্ত ওদের যাদবপুর ঝিল রোডের অফিসে গেলাম। সেখানে অফিসও তালা বন্ধ।"

গরফা থার্ড লেনের বাসিন্দা মেরি ফার্নান্ডেজের অবস্থা আরও বেহাল। পরিবারের পাঁচজনকে নিয়ে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল সিঙ্গাপুর। সেই মতো ওই সংস্থাকে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। ভিসার জন্য সবার পাসপোর্টও দেন তিনি। তারপর থেকে অফিস তালাবন্ধ করে বেপাত্তা সংস্থার মালিক।

রবিবার এ রকম ১০টি প্রতারিত পরিবার গরফা থানায় যান অভিযোগ জানাতে। সেখানে গিয়ে তাঁদের আক্কেল গুড়ুম। এই প্রতারিত ১০ জনের সব মিলিয়ে খোয়া গিয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। তবে তাঁরা থানায় পৌঁছনোর আগেই ওই একই সংস্থার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন আরও দু'জন। তাঁদের বেশ কয়েক লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে ওই সংস্থা। পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু এই ক'জন নন। আরও অনেকে প্রতারিত হয়েছেন।

তবে পুলিশের ঘুম ছুটিয়েছে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে আসা একটি ইমেল। সেখানে বেঙ্গালুরু প্রবাসী বাঙালিদের একটা বড় দলকে ঠিক একই ভাবে  প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সেই অভিযোগে জানানো হয়েছে, অনলাইনে তাঁরা প্রায় পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা দিয়েছিলেন ওই সংস্থাকে। প্রায় পঞ্চাশ জনের একটি দলের ভ্রমণের জন্য। টাকা দেওয়ার পর থেকেই আর কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না ওই সংস্থার কারওর সঙ্গে। ওই অফিসের আশে পাশের বিভিন্ন দোকানদাররা পুলিশকে জানিয়েছেন, পুজোর আগে থেকেই তালাবন্ধ স্কাইলার্কের অফিস। একই ভাবে বন্ধ সংস্থার বহরমপুরের অফিসও। পুলিশ সংস্থার কর্ণধারের খোঁজ করা শুরু করেছে। কিন্তু এখনও কারওর হদিশ পাওয়া যায়নি।