আন্দামানে জারোয়াদের হাতে খুন মার্কিন নাগরিক, দেহের খোঁজে চলছে তল্লাশি


আন্দামান–নিকোবর দ্বীপে জারোয়াদের হাতে খুন হলেন এক মার্কিন নাগরিক। আমেরিকান জন অ্যালেন চৌ–কে যে সাতজন মৎস্যজীবী উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। আন্দামানের এই দ্বীপটিতে যে সব জারোয়ারা বাস করেন, তাঁরা অত্যন্ত আমানবিক বলে জানা গিয়েছে। এই দ্বীপে কোনও পর্যটকদের যাওয়াই নিষেধ রয়েছে। 

২০১১ সাল থেকে এই উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে প্রায় ৪০ জন জারোয়া বাস করে। যাদের সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। ধৃত মৎস্যজীবীরা পুলিশকে জানায়, ১৬ নভেম্বর দ্বীপে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই বছর সাতাশের ওই পর্যটককে টেনে নিয়ে যায় কয়েক জন আদিবাসী। তীর মারা হয় তাঁকে। কিন্তু তারপরও ওই মার্কিনি পর্যটক হাঁটতে পারছিলেন। এরপর মৎস্যজীবীরা দেখতে পায়, জনকে মাটির উপর দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কয়েক জন তাঁর দিকে তীর নিয়ে তেড়ে যায়। আরও কিছুটা দূরে জনের শরীরের খানিকটা অংশ মাটির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়। এর বাইরে আর কিছু দেখতে পায়নি বলে মৎস্যজীবীরা পুলিশকে জানিয়েছে। এরপরই ওই মার্কিন নাগরিক গায়েব হয়ে যান। পরের দিন মৎস্যজীবীরা ওই পর্যটকের দেহের খোঁজে ফের আসে কিন্তু হদিশ পায় না দেহের।

মৎস্যজীবীরা এরপর পোর্ট ব্লেয়ারে এসে স্থানীয় ধর্মযাজক অ্যালেক্সকে গোটা ঘটনাটি জানান। অ্যালেক্সের বন্ধু ছিলেন জন। ওই ধর্মযাজকই জনের মৃত্যুর খবর আমেরিকায় তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয় এবং সাহায্যের জন্য দিল্লিতে আমেরিকার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিস ওই ধর্মযাজককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর আগে জন অ্যালেন বহুবার আন্দামানে এসেছেন। আন্দামান সরকারের পক্ষ থেকে ওই মার্কিন নাগরিকের দেহের খোঁজে হেলিকপ্টার নিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিন্তু সেন্টিনেলের দিকে যেতে পারছে না হেলিকপ্টার। কারণ জারোয়ারা যে কোনো সময় হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে। এই সুরক্ষিত দ্বীপে একমাত্র উচ্চ–পর্যায়ের অনুমতি নিয়ে তবে প্রবেশ করতে পারে প্রতিরক্ষা বাহিনী। আন্দামানের এই বাসিন্দাদের জন্য বেশ কিছু দ্বীপ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে স্বাধীনভাবে থাকতে পারে জারোয়ারা। তাঁদের সঙ্গে সভ্য সমাজের কোনও যোগাযোগ নেই এবং তারা রাখতেও চায় না।