বিদ্যুতের বিল আড়াই লক্ষ থেকে কমে হল ৩৫৪ টাকা!‌


ফরাক্কা:  খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল বিদ্যুৎ দপ্তর। মিটার পরীক্ষা করে বিড়ি শ্রমিক মহিলার বিদ্যুতের বিল ২ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা থেকে কমে হল মাত্র ৩৫৪ টাকা। ঘটনায় খুশি মহিলা বিড়ি শ্রমিক হুসনেরা বিবি ও তাঁর পরিবার।

প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগে হুসনেরার স্বামী অভিমানে ঘর ছেড়ে ফেরার হয়েছেন। দুই মেয়ে ও এক সন্তানকে নিয়ে কোনও রকমে বিড়ি বেঁধে অভাব–‌অনটনে সংসার চালান। সম্বল বলতে শুধুমাত্র বসতভিটে। এক কথায় নুন আনতে পান্তা ফুরোনো অবস্থা। ফরাক্কা বিদ্যুৎ পর্ষদ থেকে বাড়ির বিদ্যুতের বিল হাতে পেয়ে রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছিল বছর পঞ্চাশের হুসনেরা বিবির। এক সঙ্গে এত টাকা কখনও দেখেননি তিনি। তা–‌ও আবার বিদ্যুতের বিল ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৭ টাকা ৭৬ পয়সা!‌ এত বিপুল রাশির বিদ্যুতের বিল দেবেন কী করে?‌ ঘটনাটি ঘটেছিল ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়রামপুর দক্ষিণ বাগানে। বিদ্যুৎ দপ্তরের এই ভুতুড়ে বিলের খবর জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। '‌আজকাল'‌ সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে বিদ্যুৎ দপ্তর।

ফরাক্কার অর্জুনপুরের জয়রামপুর বাগানটোলার বাসিন্দা আলম শেখ। পেশায় ছিলেন দিনমজুর। অভাব–‌অনটনের কারণে পারিবারিক বিবাদে অভিমানে বছর দশেক আগে ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন তিনি। আর ফেরেননি। বাড়ি থেকে ফেরার হলেও আলম শেখের নামেই বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। (‌যার আইডি নম্বর (৩০১৭০৪৭৭২, মিটার নম্বর এফ এইচ ৫৭৭৩)। প্রতিমাসে নিয়মিত বিল পরিশোধও করা হয়। বাড়িতে দুটি এলএডি বাল্ব ও একটি সিলিং ফ্যান রয়েছে। আগস্টে বিদ্যুতের বিল এসেছিল তিন মাসের ২৬৩ টাকা ৭০ পয়সা। অথচ রবিবার সন্ধেয় চলতি মাসের বিদ্যুতের বিল এসেছে তিন মাসের ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৭ টাকা ৭৬ পয়সা। বিল হাতে পেয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় হুসনেরা বিবির।

তিনি জানান, এত টাকা এক সঙ্গে কোনও দিন দেখিনি। বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে গিয়ে বসতভিটে বিক্রি করতে হবে। দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে পথে বসা ছাড়া কোনও পথ নেই। যদিও এই ভুতুড়ে বিল নিয়ে প্রতিবেশীরা হুসনেরা বিবির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করে সঠিক বিল পাঠানোর দাবি নিয়ে ফরাক্কা বিদ্যুৎ পর্ষদে আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয়রা। ফরাক্কা বিদ্যুৎ পর্ষদ দপ্তরের কর্মীরা গিয়ে মিটার পরীক্ষা করে তিন মাসের বিল করে দেন ৩৫৪ টাকা। ঘটনায় খুশি হুসনেরা বিবি। জানান, অত টাকার বিল দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকেরা এসে মিটার পরীক্ষা করে সঠিক বিল করে দেওয়ায় আমি খুশি।‌