স্কুটারে মিড-ডের চালের বস্তা নিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন প্রধান শিক্ষক!


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের চাল চুরির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে আটক করল পুলিশ। সোমবার কাঁথি-১ ব্লকের নাটদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফ আহমেদ খান তাঁর স্কুটারে মিড-ডে মিলের চালের বস্তা চুপিসারে পাচারের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। খবর দেন বিডিও এবং পুলিশকে।  কাঁথি-১ এর যুগ্ম বিডিও প্রীতম মণ্ডল বিদ্যালয়ে আসেন। কাঁথি থানার পুলিশও পৌঁছয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রধান শিক্ষককে আটক করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চালের বস্তা-সহ স্কুটারটি।

বাসিন্দাদের দাবি, সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ প্রধান শিক্ষক স্কুটার নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। যে ঘরে চাল রাখা ছিল সেই ঘর খুলে এক বস্তা চাল নিয়ে স্কুটারে রাখেন। বিদ্যালয়ের  পাশেই স্থানীয় একটি ক্লাবের কালীপুজো হচ্ছিল। ক্লাবের সদস্যরা দেখতে পেয়ে প্রধান শিক্ষককে ধরে ফেলেন।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা রেখা জানার স্বামী তপন জানা বলেন, "প্রধান শিক্ষক কোথায় চাল নিয়ে যাচ্ছিলেন জানতে চাওয়ায় নানা জনকে নানা রকম উত্তর দিচ্ছেন।'' তপনবাবু-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা কাঁথি থানা ও বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রীতমবাবু বলেন, ''সরকারি মিড-ডে মিলের চালের বস্তায় যে লোগো ও লেখা থাকে, এদিন স্কুটারে থাকা চালের বস্তায় সেই লেখা ও লোগো ছিল।  পরীক্ষা করে মনে হয়েছে এই চাল মিড ডে মিলের চাল। তাই প্রধান শিক্ষককে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনার তদন্ত হবে।''

গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, ২০১৫ সাল থেকে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে মদ্যপ অবস্থায় বিদ্যালয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ে এলেও ক্লাস না নেওয়া এবং সময়ের অনেক আগেই বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকেরাও গ্রামবাসীদের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছেন। কাঁথি পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মণি সাহা বলেন, "ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ এসেছিল। এদিনের ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।''

প্রধান শিক্ষক আরিফ আহমেদ খান অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, "স্থানীয় বাসিন্দা তপন জানা পুজোর ছুটির আগে বিদ্যালয়ের ব্যাঙ্কের পাস বই ও চেক বই জোর করে নিয়ে যান। সে ব্যাপারে আমি ৩ অক্টোবর কাঁথি  থানায় অভিযোগ দায়ের করি। বিডিও, এসআই সবাইকে জানিয়েছিলাম। তার  বদলা নিতেই আমাকে এ ভাবে ফাঁসানো হল।''